ইনিংস বড় করতে না পারার পেছনে দায়িত্ববোধের ঘাটতির কথা সামনে এনেছিলেন জাতীয় দলের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ভালো শুরুর পরও মাঝপথে থমকে যাচ্ছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। এজন্য নিজের দায়টাই দেখছিলেন সবচেয়ে বেশি। দায় শোধ করতে, চেষ্টা করার ও বাড়তি পরিশ্রম করার কথাও বলেছিলেন।
নিজের দেওয়া সেই ‘কথা রেখে’ এবার ঝলমলে এক সেঞ্চুরি তুলে নিলেন তানজিদ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে পেয়েছেন শতকের স্বাদ। সোমবার (৭ মার্চ) পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। নিজেদের তৃতীয় ১০ উইকেটে জয় পাওয়ার ম্যাচে ৫৯ বলে ১০৩ রান করেন তানজিদ। মাত্র ৫৯ বলে ১০ চার ও ৭ ছক্কায় ১০৩ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটাও উঠেছে তার হাতে।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে পারটেক্স মাত্র ১২৯ রানে গুটিয়ে যায়। জবাবে তানজিদ ঝড়ে ১৮.
আরো পড়ুন:
রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ হাসি গুলশানের
শান্তদের জিম্বাবুয়ে সিরিজের ক্যাম্পে ছাড়তে চায় না ক্লাবগুলো
২৬ বলে ফিফটিতে পৌঁছান তানজিদ। সেঞ্চুরি হবে কিনা তখনও বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তিন অংকে পৌঁছে যান চোখের পলকে। তাকে সেঞ্চুরির সুযোগ করে দিয়েছেন সতীর্থ সাইফ হাসান। আঁটসাঁট ব্যাটিংয়ে কেবল স্ট্রাইক রোটেট করছিলেন সাইফ। অপরপ্রান্তে তানজিদ আগ্রাসী ক্রিকেটে তুলে নেন এবারের লিগে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি। এর আগে তিনটি ফিফটি পেয়েছিলেন তিনি। তানজিদের সঙ্গে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফ। ৫৩ বলে ১ চারে সাইফ অপরাজিত থাকেন।
এর আগে স্পিনার শেখ মাহেদী হাসান বোলিংয়ে দাপট দেখান। ১০ ওভারে ১ মেডেনে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন অফস্পিনার। এছাড়া পেসার শরিফুল ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজা ২টি করে উইকেট নেন। ১ উইকেট করে পান সাইফ ও সাইমুন।
ব্যাটিংয়ে পারটেক্সের হয়ে হাল ধরতে পারেননি কেউ। সর্বোচ্চ ৪১ রান করে রুবেল মিয়া। এছাড়া আহরার ২৪, শহিদুল ১৯ রান করেন।
নয় ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এটি পঞ্চম জয়। পারটেক্সের সমান ম্যাচে সপ্তম হার।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি