যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসছে: ট্রাম্প
Published: 8th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান আগামী শনিবার একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ‘সরাসরি আলোচনা’ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, যদিও তিনি বলেছেন এটি ‘পরোক্ষ’ আলোচনা হবে, তবে একইসঙ্গে এটিকে ‘একটি সুযোগ ও একটি পরীক্ষা’ বলেও বর্ণনা করেছেন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
ইউএসটিআরকে বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠি
যুক্তরাষ্ট্রের আরো ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ
আইসিসির গ্রেপ্তার এড়িয়ে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন নেতানিয়াহু
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (৭ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা ‘খুব উচ্চ পর্যায়ে’ হবে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো না যায় তাহলে এটি ‘ইরানের জন্য খুব খারাপ দিন’ হবে।”
গত মাসে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করার পর ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা উত্থাপন করেছিলেন।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকের পর ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার এই কথা প্রকাশ করেন। ট্রাম্প এর আগে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে হামলার হুমকিও দিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “শনিবার (ইরানের সঙ্গে) আমাদের একটি খুব বড় বৈঠক আছে এবং আমরা সরাসরি তাদের (ইরানের) সঙ্গে কাজ করছি.
ট্রাম্প পরবর্তীতে বলেন, “আলোচনা সফল না হলে ইরান ‘বড় বিপদে’ পড়বে।” তিনি আরো বলেন, “ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না এবং যদি আলোচনা সফল না হয়, তাহলে আমি মনে করি এটি ইরানের জন্য খুবই খারাপ দিন হবে।”
তবে আলোচনায় কে বা কারা অংশ নিচ্ছেন, আলোচনা কতটা এগিয়েছে – এসব বিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি নিশ্চিত করেছেন, ওয়াশিংটন এবং তেহরান ১২ এপ্রিল ওমানে বৈঠক করবে।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে লিখেছেন, “এটি যেমন একটি সুযোগ, তেমনি একটি পরীক্ষা। বল এখন আমেরিকার কোর্টে।”
গত মাসে, ট্রাম্প সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ইরানের নেতার কাছে আলোচনার জন্য তার ইচ্ছা প্রকাশ করে একটি চিঠি পাঠান।
ইরান সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, যদিও তাদের নেতৃত্ব তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আমেরিকার সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার ইঙ্গিত দেয়।
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা হ্রাস করা কয়েক দশক ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক নীতি লক্ষ্য।
২০১৫ সালে, তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন, যার অধীনে তেহরান তাদের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড সীমিত করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের ইরানে প্রবেশের অনুমতি দেবে যাতে নিশ্চিত করা যায় যে, স্থাপনাগুলো কেবল বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, অস্ত্র উৎপাদনের জন্য নয়।
বিনিময়ে, ইরানকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা দেশটির অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
এই চুক্তিতে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছিল।
তবে, ২০১৬ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে চুক্তি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। ট্রাম্প তার প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইরানের সঙ্গে চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
পরবর্তী বছরগুলোতে, ইরান ক্রমবর্ধমানভাবে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, তেহরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বিশাল মজুদ তৈরি করেছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বারবার ইরানের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তির আলোচনার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছেন এবং যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারেন তাহলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
ইসরায়েল তাদের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখাকে মূল লক্ষ্য হিসেবে দেখছে।
গত বছর ইসরায়েল বলেছিল, তারা ইসরায়েলে ইরানের পূর্ববর্তী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ হিসেবে একটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করেছে।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ যে, ইরান কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে।”
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “যদি এটি কূটনৈতিকভাবে সম্পূর্ণরূপে করা যায়, যেমনটি লিবিয়ায় করা হয়েছিল, আমি মনে করি এটি একটি ভালো জিনিস হবে।”
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ন র জন য কর ছ ল কর ছ ন ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট নগরে প্যাডেলচালিত রিকশা ভাড়া ন্যূনতম ২০, সর্বোচ্চ ১০০ টাকা
সিলেট নগরে প্যাডেলচালিত রিকশার ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে মহানগর পুলিশ। তালিকা অনুযায়ী ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ভাড়া ২০২৭ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
আজ সোমবার সকালে মহানগর পুলিশের কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিলেট শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে যাতায়াতের জন্য নতুন করে প্রস্তাবিত রিকশা ভাড়ার হার নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাড়ার তালিকা প্রণয়নের সময় নগরের রাজনীতিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, চাকরিজীবী, ছাত্র-ছাত্রী, প্যাডেল রিকশা সমিতি, সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিদের মতামত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ প্যাডেলচালিত রিকশা ভাড়ার তালিকা নির্ধারণ করেছিল। তবে ওই ভাড়া তালিকা শুরু থেকে মেনে নেননি রিকশাচালকেরা। এর ১০ বছর পর পুলিশের পক্ষ থেকে রিকশা ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
পুনর্নির্ধারিত প্রস্তাবিত ভাড়া তালিকায় দেখা গেছে জিন্দাবাজার মোড় (পয়েন্ট) থেকে লামাবাজার, মিরাবাজার, আম্বরখানা, ভাতালিয়া পর্যন্ত ৩০ টাকা। সুবিদবাজার, পাঠানটুলা, ঈদগাহ, শেখঘাট পর্যন্ত ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ, ওসমানী মেডিকেল পর্যন্ত ৫০ টাকা। বালুচর, টিলাগড়, বাগবাড়ি, চৌকিদেখি, পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট পর্যন্ত ৬০ টাকা।
কোর্ট পয়েন্ট থেকে টিলাগড় পর্যন্ত ৬০ টাকা। শিবগঞ্জ, নতুন ব্রিজ ৪০ টাকা। মিরাবাজার ও যতরপুর ৩০ টাকা। উপশহর (এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, জি, এইচ, আই, জে, কে ব্লক) ৫০ টাকা। নতুন ব্রিজ হয়ে দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল ৭০ টাকা। রেলওয়ে স্টেশন, গোপশহর মকন দোকান, গোয়াবাড়ি, আখালিয়া বিজিবি ক্যাম্প গেট, ভাঙ্গাটিকর, টুলটিকর, মিরাপাড়া পর্যন্ত ৮০ টাকা। ঝেরঝেরিপাড়া, শিবগঞ্জ সোনাপাড়া, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, উত্তর কাজীটুলা, গোয়াইটুলা, আম্বরখানা, মাহিমপুর, দর্শন দেউরী, সুবিদবাজার, ভাতালিয়া, ওসমানী মেডিকেল, কুমারপাড়া (ঝরনারপাড়) ৫০ টাকা। দর্জিবন্দ, শাহী ঈদগাহ, লেচুবাগান, হাউজিং এস্টেট, লন্ডনী রোড ও পাঠানটুলা, বাগবাড়ি, বর্ণমালা পয়েন্ট, এতিম স্কুল, নবাব রোড (শেখঘাট পিচের মুখ, কলাপাড়া ডহর), ঘাসিটুলা বেতেরবাজার, আম্বরখানা, কলবাখানী, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর ৫০ টাকা। জল্লারপাড়, তোপখানা ২০ টাকা।
এ ছাড়া কোর্ট পয়েন্ট থেকে নতুন ব্রিজ হয়ে কদমতলী, লাউয়াই, বিসিক শিল্পনগরী, বরইকান্দি, চৌকিদেখি, লাক্কাতুরা, শাপলাবাগ ৭০ টাকা। কাজীটুলা, রাজারগলি, শাহজালাল দরগাহ গেট, মিরের ময়দান, শেখঘাট, রিকাবীবাজার, দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, পশ্চিম কাজিরবাজার, ছড়ারপার, কুমারপাড়া পয়েন্ট, মিরাবাজার আগপাড়া, সোবহানীঘাট, চালিবন্দর ৩০ টাকা। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গেট ৯০ টাকা। কুমারগাঁও বাস টার্মিনাল ১০০ টাকা। খোজারখোলা, সরকারি কলেজ ছাত্রাবাস, বালুচর, বাদাম বাগিচা, মদিনা মার্কেট, কানিশাইল খেয়াঘাট, পীর মহল্লা কুশিঘাট ৬০ টাকা।
আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সুবিদবাজার, শাহী ঈদগাহ, কাজীটুলা ২০ টাকা। মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, চৌকিদেখি ৩০ টাকা। লাক্কাতুরা, মিরাবাজার, নয়াসড়ক ৪০ টাকা। শিবগঞ্জ ৬০ টাকা। টিলাগড়, উপশহর (এবিসি পয়েন্ট), নতুন ব্রিজ ৬০ টাকা।
শিবগঞ্জ পয়েন্ট থেকে টিলাগড়, সেনপাড়া, খরাদিপাড়া ২০ টাকা। নতুন ব্রিজ, বালুচর ৩০ টাকা। ঈদগাহ ৫০ টাকা। আম্বরখানা, লামাবাজার, শেখঘাট ৬০ টাকা। পাঠানটুলা, মদিনা মার্কেট, ওসমানী মেডিকেল, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, শেখঘাট, সুবিদবাজার ৭০ টাকা এবং কদমতলী বাস টার্মিনাল ৮০ টাকা।
দক্ষিণ সুরমা কিনব্রিজ থেকে রেলগেট ২০ টাকা। হুমায়ুন রশীদ চত্বর, টেকনিক্যাল, পর্যন্ত লাউয়াই ৩০ টাকা। শিববাড়ি ও গোটাটিকর পর্যন্ত ৪০ টাকা। বরইকান্দি ও আলমপুর পর্যন্ত ৫০ টাকা এবং মকন দোকান পর্যন্ত ৭০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত রুটের বাইরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ গজের জন্য অতিরিক্ত ১০ টাকা ভাড়া প্রযোজ্য হবে। তবে নির্ধারিত রুটে উল্লিখিত নয় এমন নিকটবর্তী গন্তব্যে যাত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।