কুমিল্লার মুরাদনগরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এই অভিযোগ নাকচ করে উপদেষ্টা বলেছেন, স্থানীয় একজন চাঁদাবাজের সহযোগীদের রক্ষার জন্য তাঁর ওপর এই দোষারোপ করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোল্লা মজিবুল হক অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও তাঁর চাচাতো ভাই ওবায়েদ উল্লাহর সহযোগিতায় মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা–কর্মীদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এসব নেতা–কর্মী মুরাদনগরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছেন। আর এসব কর্মকাণ্ডে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা বাধা দেওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মুরাদনগরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটিতে উপদেষ্টা আসিফের চাচতো ভাই ওবায়েদ উল্লাহকে আহ্বায়ক করে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতা–কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ সহচর গোলাম কিবরিয়াকে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রমজানের শুরুর দিকে শ্রীকাইল ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি আনোয়ারকে এনসিপির ব্যানারে সজ্জিত গাড়ি দিয়ে এলাকায় আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ২০–২৫ জন নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, গত ২৪ মার্চ মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ সিএনজিস্ট্যান্ডে ওবায়েদ উল্লাহ সিরিয়াল ভেঙে সিএনজি নিতে চাইলে অন্য সিএনজিচালকরা বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওবায়েদ উল্লাহ সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীবসহ তরুণদের ডেকে এনে অন্য সিএনজিচালকদের মারধর করেন ও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ছাড়া সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুমিল্লার পুলিশ সুপার পরিবর্তন, নতুন পুলিশ সুপার এসেই মুরাদনগর ও বাঙ্গুরা থানার ওসিকে বদল করে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর নির্যাতন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

মুরাদনগরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা গত ৫ আগস্টের পরও মামলা-হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। তিনি দাবি করেন, মুরাদনগরে এনসিপিতে যাঁরা আছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা–কর্মী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছে। স্থানীয় একজন চাঁদাবাজের সহযোগীদের রক্ষার জন্য তাঁর ওপর এই দোষারোপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ রাতে মুরাদনগরে একজন চাঁদাবাজকে (আবুল কালাম নামে ইউনিয়ন পর্যায়ের এক শ্রমিক দল নেতা) ছাড়াতে থানায় হামলা করেছিল বিএনপি। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে থানায় হামলা করা হয়। থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পুলিশ আহত হয়, এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা চাঁদাবাজির অভিযোগ করতে থানায় গিয়েছিল, তাঁদেরও আহত করা হয়। থানায় হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। সেই ঘটনায় জড়িতদের পুলিশ খুঁজছে। ওই অপরাধীদের শেল্টার দেওয়ার জন্যই সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা ব্লেম (দোষারোপ) দেওয়া হচ্ছে। অথচ থানায় হামলার ঘটনাটা সারা দেশের মানুষ দেখেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলার ভিডিওও প্রকাশিত হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র দনগর উপজ ল কর ম দ র ব এনপ র উপদ ষ ট কর ম র আওয় ম ঘটন য় স এনজ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। 

এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন।  সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল

সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান

মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে। 

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি
  • উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ৩৫
  • বন্দরে ডেভিল হান্ট অভিযানে ছাত্রলীগ নেতা আয়াত গ্রেপ্তার  
  • মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র
  • কুমিল্লায় ট্রিপল মার্ডার মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার