নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার বিরুদ্ধে৷ মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা৷

অভিযুক্ত তাকবির আমান (২৪) ছাত্র সংগঠনটির মহানগর শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সংগঠক৷ সিদ্ধিরগঞ্জ ভূমিপল্লী এলাকায় থাকেন তিনি৷
অভিযোগে তার আরও কয়েকজন বন্ধুকে অপরাধের সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷

অভিযোগে ভুক্তভোগীর বাবা উল্লেখ করেন, গত ৭ এপ্রিল বিকেলে বাদী ও তার স্ত্রী ঘরের বাইরে থাকার সময় অভিযুক্ত তাকবির আমান তার বাড়িতে ঢুকে তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে৷ পরে তার মেয়ের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটক করলে আমানের বন্ধুরা এসে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়৷

বাদী জানান, তার মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন৷ এক বছর হয়েছে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছেন৷ স্কুলে যাওয়ার পথেও অভিযুক্ত তার মেয়ে উত্ত্যক্ত করতেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির নেতা তাকবির আমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি৷

তবে মহানগর সভাপতি মাহফুজ খান মোবাইল ফোনে বলেন, ঘটনাটি যেভাবে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়৷ মেয়ের সঙ্গে ছেলেটির পূর্বপরিচয় ছিল৷ এখানে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে বলেও জেনেছি৷ তারপরও পুরো বিষয়টি সঠিকভাবে জানার চেষ্টা করছি আমরা৷

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলম বলেন, অভিযুক্তের সঙ্গে ভুক্তভোগীর পূর্বপরিচয় ছিল৷ প্রেমের সম্পর্কের কথাও শুনছি৷ তবে যেহেতু মেয়ের বয়স অনূর্ধ্ব ১৮, তাই বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি৷ তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ