বার্নাব্যুতে ঘুরে দাঁড়াবে রিয়াল- আনচেলত্তি
Published: 9th, April 2025 GMT
ইন্টার মিলানের বিপক্ষে সান সিরোতে ১৯৮৪/৮৫ মৌসুমে উয়েফা কাপের (চ্যাম্পিয়নস লিগ) সেমিফাইনালের প্রথম লেগ ২-০ ব্যবধানে হেরে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর সিরি আ প্রতিপক্ষকে সতর্ক করে লস ব্ল্যাঙ্কসদের স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড জুনিতো বলেছিলেন, “সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক বড় সময়”। লজিক যেখানে শেষ হয়, জুনিতোর এই বাক্যটা সেখানে টনিক হিসেবে কাজ করে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল, ২০২৫) দিবাগত রাতে আর্সেনালের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হওয়ার পর রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি হয়ত জুনিতোর সেই বাক্যেই অনুপ্রাণিত হতে চাইবেন। কারণ জুনিতো কথা রেখে সেই মৌসুমে লস ব্ল্যাঙ্কসদের শিরোপা জিতিয়েছিলেন। গতরাতে গানার্সদের বিপক্ষে উড়ে যাওয়ার পরও একই টনিকে উজ্জীবিত আনচেলত্তিও বললেন, “কেউ যদি ৩-০ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেটা রিয়ালই।”
এমিরেটসে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগটা ৩-০ ব্যবধানে হেরে যাওয়ায়, রিয়ালকে আরেকবার রূপকথার গল্প লিখতে হবে। আগেও তারা পিছিয়ে থেকে ‘কামব্যাকের’ গল্প লিখেছে। তবে এবারের ব্যাপারটা কঠিন। কারণ আসরের নাম চ্যাম্পিয়নস লিগ হওয়ার পর, ৩ গোলে পিছিয়ে থেকে ফিরে আসতে পারেনি লস ব্ল্যাঙ্কসরা। সবশেষ ইউরোপিয়ান কাপ যুগে ১৯৭৫/৭৬ মৌসুমে তারা এমন কামব্যাক করেছিল। প্রথম লেগে ডার্বি কাউন্টির মাঠে ৪-১ গোলের হারের পর দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে ৫-১ ব্যবধানে জিতেছিল তারা।
আরো পড়ুন:
রিয়ালকে কারি বানিয়ে দিলেন রাইস
আর্সেনালের বিপক্ষে রিয়ালের প্রতিশোধের ম্যাচ
ম্যাচ হারের পর আনচেলত্তি বলেন, “আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ কিন্তু আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আমরা যেভাবেই হোক চেষ্টা করব। দেখা যাক আমরা তা করতে পারি কিনা।”
আনচেলত্তি এরপর শুনালেন আসধার বাণী, “মনে হচ্ছে আজ রাতের পর আর কোনও সুযোগ নেই আমাদের। কিন্তু ফুটবলে সবকিছু সবসময়ই পরিবর্তিত হয়। যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। এটা খুবই কঠিন, কিন্তু বার্নাব্যুতে অদ্ভুত কিছু ঘটেছে এর আগেও। কেউ যদি ৩-০ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেটা রিয়ালই।”
আনচেলত্তি মনে করিয়ে দিলেন যে, দুটি স্পট কিকই মূলত খেলার চেহরা বদলে দিয়েছে, “প্রথমার্ধে দলকে বেশ সুসংগঠিত দেখাচ্ছিল। কেউ আশা করেনি আর্সেনাল দুটি ফ্রি-কিক থেকে গোল করবে। দুটি সেট-পিস গোলের পর আমরা মানসিক এবং শারীরিকভাবে পিছিয়ে পড়েছি।”
আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল, ২০২৫) দিবাগত রাতে ফিরতি লেগে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবে আর্সেনাল।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল ব যবধ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।