ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাঁর দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনের সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপে এ কথা বলেন মাখোঁ।

এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, চলমান ইসরায়েল–ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে আগামী জুনে জাতিসংঘে একটি সম্মেলন হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে ফ্রান্স এ সম্মেলনের কো–চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এ সম্মেলনে ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চান তিনি।

আরও পড়ুনইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা: অপরাধের শত বছর, অন্যায়ের ৮০, পাপের ৬৯ ১৭ ঘণ্টা আগে

মাখোঁ বলেন, ‘স্বীকৃতির বিষয়ে আমাদের অবশ্যই এগোতে হবে। কয়েক মাসের মধ্যে আমরা এটা করতে চাই।’

প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ফিলিস্তিন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহিন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফ্রান্সের স্বীকৃতির বিষয়টি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার রক্ষা ও দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটা সঠিক পথে এগোনোর একটি পদক্ষেপ হবে।

আরও পড়ুনগাজা মানুষ ‘হত্যার ক্ষেত্র’, বললেন গুতেরেস, অবরুদ্ধ অবস্থা কাটাতে বিশ্বকে কাজ করার আহ্বান ৬ সংস্থার১৬ ঘণ্টা আগে

তবে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার বলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের পক্ষে যেকোন ‘একতরফা স্বীকৃতি’ হামাসের হয়ে ভূমিকা রাখবে।

জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৬টিই ফিলিস্তিনিকে সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে গত বছর ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামাস, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, জ্যামাইকা ও বার্বাডোস।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

করোনার চোখ রাঙানির মধ্যেই আজ খুলছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়

ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছুটি শেষ হয়েছে ১২ জুন। শুক্র ও শনিবার (১৩ ও ১৪ জুন) ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে রবিবার (১৫ জুন) খুলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ক্লাস ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ থেকে। তবে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বিগ্ন শিক্ষর্থী ও অভিভাবকরা। 

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ থেকে প্রথম ধাপে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হবে। এরপর প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদুল আজহার ছুটির সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন ছুটি রয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে এখন চলছে গরমের ছুটি। মাদ্রাসায় ছুটি সবচেয়ে দীর্ঘ।

গত ১ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হয়। শিক্ষা স্তর ভেদে ছুটির সময়ের পার্থক্য ছিল। যেখানে মাদ্রাসাগুলো পায় সর্বোচ্চ ২৫ দিনের ছুটি আর সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোতে ছুটি ছিল ১০ দিন।

শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবে ২৪ জুন। মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলবে ২২ জুন, মাদ্রাসা ২৬ জুন এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২২ জুন খুলে দেওয়া হবে। তবে ছুটি শেষে সাপ্তাহিক বন্ধ পড়লে সেক্ষেত্রে আরো দুদিন পর প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাসসহ সব কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে।

এদিকে, গত কিছুদিন ধরে আবারো করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯ জনকে পরীক্ষা করে ৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮০৭ জন।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

এই অবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়া, বাইরে ও জনসমাগম স্থলে মাস্ক পরা, আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, চোখ, নাক ও মুখে হাত না দেওয়া, হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা।

মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান জানান, করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্কুল-কলেজের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মশার লার্ভা ধ্বংস করতে ছুটির আগে ও পরে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, তারা সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারিতে রেখেছে এবং প্রয়োজনে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এমনকি চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা নিয়েও বিকল্প ভাবা হচ্ছে। পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ