লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাইজুদ্দিন দেওয়ান (৪৫) নামের এক প্রবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁর বড় ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে রায়পুর থানায় মামলাটি করেন।

এদিকে এ ঘটনায় উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুনবিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রবাসীর মৃত্যুর জের ধরে ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর০৮ এপ্রিল ২০২৫

মামলায় রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি ফারুক কবিরাজকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাঁর ছোট ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ১৬০ জনকে।

নিহত ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজ বৃহস্পতিবারও চরবংশী ইউনিয়নে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

খুন, বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিষয়ে গতকাল রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপির নেতারা জরুরি বৈঠক করেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। রাত ১১টার দিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহম্মদ ও সদস্যসচিব শফিকুর রহমান ভূঁইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। একই সঙ্গে বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখতে দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মেহেদী কবিরাজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদ উল্লাহ গাজী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিক রাঁড়ি, ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরিফ হোসেন, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ফারুক সর্দার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ফারুক গাজী প্রমুখ।

আরও পড়ুনলক্ষ্মীপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১৫০৭ এপ্রিল ২০২৫

এর আগে গত সোমবার বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাইজুদ্দিন নিহত হন। এ ছাড়া আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই দিন বিকেলে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মধ্য চরবংশী বেড়িবাঁধ ও খাসেরহাট বাজারে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাঁর নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকার বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা চরবংশী গ্রামের ১৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে বলে জানান রায়পুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকাটিতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স র চরব শ র ঘটন য় সদস য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ