দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে ইউপি নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর একটি মামলায় সাত দিন কারাগারেও ছিলেন। এরপর জামিনে বেরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে ইউএনও কার্যালয়ে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষ হওয়ার একটু আগেই বাইরে বের হন আনোয়ার হোসেন। উপজেলা চত্বরে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান সর্দার, ছাত্রদল নেতা মেজবাহুল, সাব্বির হোসেনসহ আরও কয়েকজন। তাঁদের হাতে মারধরের শিকার হন আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলটিও সেখানে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এর আগেও আমার ওপরে হামলা করে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল ইমরান ও মেজবাহ। ৫ আগস্টের পর থেকে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন সময় আটকে আমাকে হয়রানি করে আসছে তারা। তবে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয় পেয়েছিলাম।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপি নেতা–কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে বালুমহাল দখল নিয়ে আনোয়ার হোসেনের অনুসারীদের সঙ্গে সাব্বিরের দ্বন্দ্ব হয়। এই হামলার সঙ্গে ওই বিরোধের জের থাকতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুল ইসলাম বলেন, দলের কেউ যদি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকেন এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বদল র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ