‘বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন আমার ছাওয়াল হইছে। এটা আমার ভাগ্যি। আইজ একটা বিশেষ দিন। এই দিনে ছাওয়াল পাইয়া আমি খুবই খুশি হইছি। আপনারা সকলে দোয়া কইরবেন ছাওয়ালডারে আমি জানি খুব ভালো মানুষ কইরবার পারি’- অনেক আবেগ-উচ্ছ্বাসে কথাগুলো বলছিলেন সদ্য প্রসুতি রাবেয়া খাতুন। সিরাজগেঞ্জর উল্লাপাড়া উপজেলার শিবপুর গ্রামের মোঃ আয়নালের স্ত্রী রাবেয়া। ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিনে ভোর রাতে তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। প্রায় ৪ কিলোমিটার দূর থেকে ভ্যানে করে রাবেয়ার স্বজনরা উল্লাপাড়া পৌর শহরের কেয়ার হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন তাকে। এখানে সকাল ৬টার দিকে সিজারে তার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। নতুন এই শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার পর সুস্থ রয়েছেন। সুস্থ রয়েছেন তার মাও। রাবেয়া খাতুন গর্ভবতী হবার পর কেয়ার হাসপাতালের ডাঃ মোঃ লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
রাবেয়া খাতুন আরও জানান, শখ করে তিনি সদ্য জন্ম নেওয়া ছেলে শিশুটির নাম রেখেছেন অন্তর। অন্তর কেন রাখলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, নতুন জন্ম নেওয়া ছেলেটি তার কলিজার টুকরা। নাড়ি ছেড়া ধন। তাই তিনি তার সন্তানের নাম রেখেছেন অন্তর। তার বাবার বাড়ি উল্লাপাড়া উপজেলার অলিপুর গ্রামে। ২০১৪ সালে তাদের বিয়ে হয়। বাবার নামও আয়নাল হক। অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে হিসাবে তার বাবা সামর্থ্য অনুযায়ী বিয়ের আয়োজন করেছেন। প্রায় ১১ বছরের সংসারে তাদের আরও একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। তারা দুজনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। তার স্বামী মোঃ আয়নাল যাত্রীবাহী বাসের ভাড়া কাটেন। তৃতীয় ছেলেটিকে তিনি ভালো মানুষের পাশাপাশি প্রকৌশলী বানাতে চান। এ জন্য সবার সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন রাবেয়া খাতুন।
রাবেয়ার স্বামী আয়নাল জানান, তিনি নিজে নানা কারণে বেশি লেখা পড়া করতে পারেননি। সংসারে স্বচ্ছলতা ছিল না। ছোট বেলা থেকে রোজগারের পথ বেছে নিতে হয়েছে তাকে। বাসে কাজ করতে দিন রাতের বেশি সময়ই তাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। বিয়ের পর সন্তান হলে খরচ আরও বেড়ে যায়। আয় বাড়ানোর জন্য নিজেকে বেশি শ্রম দিতে হয়। তার সন্তানদের লেখাপাড়ার জন্য এখন দিন রাত পরিশ্রম করছেন। বাংলা নববর্ষে প্রথম দিনে ছেলে হওয়ায় তিনি খুবই খুশি। খুশি তার পরিবারও। ছেলেটিকে সুস্থভাবে বাড়িতে নিয়ে গেলে তিনি আত্মীয় স্বজন ডেকে একটা ছোট অনুষ্ঠান করতে চান।
বাবেয়ার ভাশুর আলম হোসেন জানান, নতুন বছরের প্রথম দিনে তার ভাতিজা হওয়ায় তিনি ও তার পরিবারের লোকজন খুবই খুশি। তারা সবাই নবজাতক ও তার মাকে সুস্থ রাখতে চেষ্টা করছেন। ৩ দিন হাসপাতালে রাখবে তার ভাইয়ের বউকে। বাড়ি থেকে নিয়মিত হাসপাতালে দেখা শোনা করছেন তারা।
কেয়ার হসাপাতালের ডাক্তার মোঃ লুৎফর রহমান জানান, রাবেয়া সন্তান ধারণের পর মাঝে মাঝে চেকআপের জন্য তার কাছে আসতেন। হাসপাতালে অল্প সময়ের মধ্যেই সিজার করে তার সন্তান প্রসব করানো হয়। বর্তমানে মা ও শিশু ভালো আছে। হাসপাতাল থেকে তার প্রতি খেয়াল রাখা হচ্ছে।
হাসপাতালের নার্স সাথী খাতুন বলেন , ‘বাংলা নতুন বছরেরর প্রথমিদেন রাবেয়া খাতুন ফুটফুটে একটি সন্তানের জন্ম দেবার পর মা ও সন্তানকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। নবজাতক ও তার মার প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখছি। শিশুটির জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ শ শ র জন ম উল ল প ড় প রথম দ ন খ বই খ শ র জন য আয়ন ল বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//