পর্যটননির্ভর মালদ্বীপে আইন করে ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ‘দৃঢ় সংকল্পের’ অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। মালদ্বীপের সংসদে মঙ্গলবার আইনটি পাস হয়। এর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু আইনটির অনুমোদন দেন। তাঁর দপ্তরের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, এটি অনতিবিলম্বে কার্যকর হবে।

মুইজ্জু বিবৃতিতে বলেছেন, পর্যটনের জন্য জনপ্রিয় দেশ মালদ্বীপে ইসরায়েলের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নতুন আইনটির অনুমোদন ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অব্যাহত নৃশংসতা এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানকে প্রতিফলিত করে। এর মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনিদের লড়াইয়ের প্রতি মালদ্বীপ তার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে। 

এএফপি জানায়, ইসরায়েলিদের মালদ্বীপে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে বলে গত বছরের জুনে জানিয়েছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। ওই সময় ইসরায়েলিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে করণীয় ঠিক করতে কমিটি ঠিক করা হয়। সব প্রক্রিয়া শেষে গতকাল আইনটি আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির সংসদে তোলা হয়। সংসদে পাস হওয়ার পর কোনো বিলম্ব না করেই আইনটির অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। এ আইন পাসের জন্য আগে থেকেই বিরোধী দলগুলো এবং সরকারের মিত্ররা মুইজ্জুকে চাপ দিচ্ছিল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও গত বছর তাদের নাগরিকদের মালদ্বীপ ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছিল।

পার্লামেন্টে এই বিলকেন্দ্রিক বিতর্কে ক্ষমতাসীন দল পিএনসির কিছু এমপি নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পিএনসি সদস্য সৌধুল্লা হিলমি বলেন, আমরা এভাবে কারও সঙ্গে শত্রুতা করতে পারি না। ইসরায়েলের আরব প্রতিবেশীরা যা করার সাহস পায়নি, তা করতে যাচ্ছি আমরা।  

পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল মালদ্বীপ। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটি ভ্রমণ করেছিলেন ২ লাখ ১৪ হাজার বিদেশি পর্যটক। তাদের মধ্যে ৫৯ জন ছিলেন ইসরায়েলি। এর আগেও ইসরায়েলি পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মালদ্বীপ। পরে নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ২০১০ সালে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকেও এগোয় দেশ দুটি।

মালদ্বীপ ১ হাজার ১৯২টি ছোট ছোট প্রবাল দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি ছোট ইসলামী প্রজাতন্ত্র। দেশটি নির্জন সাদা বালুর সৈকত, অগভীর ফিরোজা রঙের লেগুন এবং মনোরম পরিবেশের জন্য পরিচিত। 

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি গণহত্যায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের এই সামরিক আগ্রাসনে লক্ষাধিক গাজাবাসী আহত হয়েছেন। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে উপত্যকাটির প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।  

রয়টার্স জানায়, ফিলিস্তিনিদের জন্য তিন বছরের একটি নতুন অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সহায়তার আওতায় তিন বছরে মোট ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউরো প্রদান করা হবে। সামাজিক যোগাযোমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় নতুন এই সহায়তার কথা জানান ইইউর ফরেন পলিসিপ্রধান কায়া কালাস। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য আমরা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসছি। ২০২৭ সাল পর্যন্ত ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউরোর এই সহযোগিতা পশ্চিম তীর ও গাজায় স্থিতিশীলতা তৈরিতে সহায়তা করবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র ম ইজ জ র জন য প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন