বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারের আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন– ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার শাহিদুল ইসলাম ও ডিবির সাবেক পরিদর্শক আরাফাত হোসেন।

একাত্তর টিভির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে ‘গণহত্যায়’ উস্কানি দেওয়ার ঘটনায় ৭১ টেলিভিশন ও মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ দু’জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। অপর আসামি হলেন ৭১ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মোস্তফা। হেফাজতে ইসলামের নেতা মুশফিকুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় এ অভিযোগ দেন। 
আসামিদের বিরুদ্ধে শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনা, উস্কানি, পরিকল্পনা ও অর্থায়নের পাশাপাশি তৎকালীন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা ও সমর্থনের অভিযোগ আনা হয়েছে। 

নৌবাহিনীর সোহায়েলকে হাজিরার নির্দেশ

অপহরণ ও গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের মামলায় র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ সোহায়েলকে আগামী ১৮ জুন হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

মঙ্গলবার এ আদেশের পর প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালের দিকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে ছাত্রশিবিরের গোলাম মর্তুজা নিহিমকে তুলে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। পরে আয়নাঘরে নিয়ে ৪৭ দিন তাঁকে আটকে রাখেন। সোহায়েলের নির্দেশে মানবতাবিরোধী ওই অপরাধ সংঘটিত হয়।
 
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মোহাম্মদ সোহায়েলকে নৌবাহিনীর ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিনের কমান্ডার হিসেবে বদলি করা হয়।

পুলিশের দুই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে নরসিংদীতে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) অনির্বাণ চৌধুরী এবং নরসিংদী জেলার জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার এ তথ্য জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। 


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ইসল ম অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ