ইরাকের প্রবল বালুঝড়ে হাসপাতালে ভর্তি ৩ হাজার ৭ শতাধিক
Published: 16th, April 2025 GMT
ইরাকের রাজধানী বাগদাদসহ বিভিন্ন প্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবল বালুঝড় বয়ে গেছে। এতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৭৪৭ জন।
ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈফ আল বদর রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আইএনএ-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার বাগদাদ এবং আরও কয়েকটি প্রদেশে বালুঝড় হয়েছে। এতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিচিৎসা নিতে এসেছেন কমপক্ষে ৩ হাজার ৭৪৭ জন। অসুস্থদের সবাই শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি
রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল বাগদাদ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আল মুথান্নায়। বাগদাদে ১ হাজার ১৪ জন এবং আল মুথান্নায় ৮৭৪ জন মঙ্গলবারের বালুঝড়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। বাকি রোগীরা অন্যান্য অঞ্চলের।
হাসপাতালে আসা এই রোগীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এসেছিলেন। তাদেরকে উচ্চতর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ঝড়ে ইরাকের কোথাও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সাঈফ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আইএনএ-কে আরও বলেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হবে। আমাদের ওষুধ, মেডিকেল সাপ্লাই কিংবা অক্সিজেন— কোনোটিরই অভাব নেই।
ইরাকে বালুঝড় বিরল কোনো দুর্যোগ নয়; তবে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে বালুঝড়ের হার বাড়ছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের জেলে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে ইরানের স্থান পঞ্চম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ল ঝড়
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা