বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্নের জবাবে যা বলল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
Published: 16th, April 2025 GMT
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশিরাই নির্ধারণ করবে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এমনটা জানানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে অংশ নেন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র টমি ব্রুস।
এ সময় বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থানের আশঙ্কা, মার্কিন ব্র্যান্ডের ওপর সাম্প্রতিক ভাঙচুরের ঘটনা, বঙ্গবন্ধুর নাতনি ও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।
টমি ব্রুসের কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, বাংলাদেশে অধ্যাপক ইউনূসের সরকারের আমলে ইসলামি উগ্রবাদের উত্থানের আশঙ্কা জানিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে নিউইয়র্ক টাইমস এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন করেছে। ঢাকায় প্রকাশ্যে ওসামা বিন লাদেনের ছবি হাতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। নাৎসি চিহ্নযুক্ত পোস্টার হাতেও ছবি দেখা গেছে।
প্রশ্নকারী সাংবাদিক আরও বলেন, ইহুদিবিরোধী বিক্ষোভ থেকে কেএফসি, কোকাকোলার মতো মার্কিন ব্র্যান্ডকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের পাশাপাশি.
এ পর্যায়ে ওই সাংবাদিককে থামিয়ে মুখপাত্র টমি ব্রুস বলেন, ‘আমি আপনার আবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশ নিয়ে বেশ কিছু ইস্যু রয়েছে। এটা এমন একটি দেশ, যাকে নিয়ে আমরা আগেও (ব্রিফিংয়ে) অনেক কথা বলেছি। এখানে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছি। কাজেই নির্দিষ্ট একটি প্রেক্ষাপটে, আমরা এটা আলাদাভাবে আলোচনা করব।
মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে আমি যেটা বলতে চাই, যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দেশটির একটি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এসব বিষয়, আর সাম্প্রতিক বিক্ষোভসহ আপনি যেগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলেন, সেসব বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের দেখভালের বিষয়। সেই সঙ্গে অবশ্যই তাদের সঙ্গে কথা বলাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ পর্যায়ে টমি ব্রুস মন্তব্য করেন, ‘শেষ পর্যন্ত, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশিরাই নির্ধারণ করবে।’
সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে মুখপাত্র টমি ব্রুস আরও যোগ করেন, ‘আপনি যেটা বলছেন, তাঁরাও (বাংলাদেশি) সেসব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। অন্যদিকে প্রতিবেদনগুলো আমরাও দেখেছি। নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমি এখানে এটাকে হালকাভাবে বলতে চাই না। তবে এটাও সত্য, গণতন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যাগুলো মোকাবিলায় মানুষের নেওয়া বাস্তবিক পদক্ষেপও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গত ২০ থেকে ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা মানুষের জীবন ধ্বংস হতে দেখেছি। কাজেই এটা একেবারে পরিষ্কার, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেরই এটাই (গণতন্ত্র) পছন্দ।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।