কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক গৃহবধূর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে সেই গ্রাম পু্লিশকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই গৃহবধূকে তালাক দেওয়া স্বামীর করা ব্যভিচার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

গ্রেপ্তার গ্রাম পুলিশের নাম সুশান্ত চন্দ্র দাস। তিনি উপজেলার সোন্দাহ গ্রামের মৃত অনিল চন্দ্র দাসের ছেলে ও নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার গৃহবধূর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে জুতার মালা পরিয়েছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূর সঙ্গে গ্রাম ওই পুলিশের অনৈতিক সম্পর্ক থাকার অভিযোগ পেয়ে গত রোববার সালিশ ডাকে গ্রামবাসী। সালিশে দু’জনের ফোনকলের অডিও শোনানো হয়। এরপর স্বজনদের মতামতের ভিত্তিতে স্বামী ওই গৃহবধূকে তালাক দেন। পরে ক্ষিপ্ত জনতা ওই গ্রাম পুলিশের গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরান। আর গতকাল রাতে গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যভিচার আইনে মামলা করেন।

জানতে চাইলে ফোনে মামলার বাদী বলেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি। বিভিন্ন কাজের অজুহাতে গ্রাম পুলিশ সুশান্ত বাড়িতে গিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ফোন রেকর্ডে যার প্রমাণ রয়েছে। বুঝতে না পেরে প্রথমে গ্রামবাসীর কাছে বিচার দিয়েছিলাম। সালিশির দিন আমাদের তালাক হয়। এর পর আমার শ্বশুর-শাশুড়ি তাদের মেয়েকে নিয়ে যান। আমি বিচার আশায় থানায় মামলা করেছি। তবে জুতার ঘটনাটি আমরা চলে আসার পরে হয়েছে।’

একাধিক গ্রামবাসী বলেন, গ্রাম পুলিশ সুশান্তের বিরুদ্ধে আগেও মেয়েদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ ছিল। এবারের ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে লোকজন গ্রাম পুলিশকে জুতার মালা পরিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওই গ্রাম পুলিশের স্ত্রী চুমকি রাণী বলেন, ‘আমার স্বামীর কোনো দোষ নেই। তবুও সেদিন গ্রামের লোকজন ডেকে নিয়ে জুতার মালা পরিয়েছে। আবার রাতে পুলিশ তাকেই ধরে নিয়ে গেছে। আমি সঠিক বিচার চাই।’

জানা গেছে, সেদিন সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মাতবর আবু তালহা রাসেল। তিনি বলেন, ‘ক্ষুব্ধ জনতা গ্রাম পুলিশকে মারধর করার পাঁয়তারা করছিল। সেজন্য কৌশল অবলম্বন করে তাকে জুতার মালা পরিয়ে সেভ (বিপদমুক্ত) করা হয়েছে।’ তার ভাষ্য, গ্রাম পুলিশ সুশান্তের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনৈতিক সম্পর্কে প্রমাণ হওয়ায় ওই নারীকে ডিভোর্স দেন তাঁর স্বামী।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ। তবে তালাকের বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ।  তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই নারীর স্বামীর করা ব্যভিচার মামলায় গ্রাম পুলিশকে গ্রেপ্তার করে আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, যেকোনো ঘটনায় আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক না। জুতার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরক য় গ র প ত র কর গ হবধ র স

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে নতুন করে শুরু ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ