গুলিবিদ্ধ ও কুপিয়ে জখমের ঘটনায় আহত ৪
Published: 17th, April 2025 GMT
কুষ্টিয়ার খোকসায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি ও খেয়াঘাটে হামলার ঘটনায় দু’জন গুলিবিদ্ধহ চারজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে গড়াই নদীর খোকসা খেয়াঘাট ও জানিপুর ইউনিয়নের বিহারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে খেয়াঘাটে দুর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে ৫ ঘণ্টা খেয়া পারাপার বন্ধ রাখে ঘাটের মাঝিরা।
গুলিবিদ্ধ শরিফুল ইসলাম বিহারিয়া গ্রামের ওহেদ আলী মোল্লার ছেলে। অপর গুলিবিদ্ধ আব্দুল মান্নান একই গ্রামের আলাউদ্দিন শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে এক দল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত উপজেলার বিহারিয়া গ্রামে জানিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজিদের বাড়িতে হানা দেয়। হামলাকারীরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে চেয়ারম্যানের ভাই শরিফুল ইসলামকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বৃত্তরা শরিফুলের হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে তাঁর বাম পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি চালায়।
গুলিবিদ্ধ শরিফুলের স্ত্রী নাজমা জানান, গভীর রাতে বাড়ির দেয়াল টপকে কয়েকজন লোক বাড়ির ভিতরে ঢুকে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁর স্বামীকে ডাকাডাকি করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্বামী নিজেই ঘরের দরজা খুলে দেন। এ সময় তিনজন লোক ঘরে প্রবেশ করে তাঁর স্বামীকে বিছানায় বসিয়ে হাত-পা বাঁধতে থাকে। এক পর্যায়ে বেধড়ক মারধর করে। পরে দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার সময় তার স্বামী শরিফুলের পায়ে একই স্থানে দুটি গুলি চালায়।
অপর গুলিবিদ্ধ আব্দুল মান্নানের ছেলে রুবেল শেখ জানান, রোববার দুপুরে মোবাইল নম্বরে কল করে তাঁর কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি টাকা দিতে অপরাগতার কথা জানান। এ ঘটনার সূত্র ধরে সন্ত্রাসীরা মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়িতে হামলা করতে পারে।
জানিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজিদ বলেন, সাত মাস আগে সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর হামলা করে একটি পা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তিনি খোকসার বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এবার তাঁর ভাই শরিফুলের পায়ে গুলি করে তাঁকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। আগের হামলাকারীরাই এবারের হামলার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।
নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।