নির্বাচনের আগে তিন শর্তের কথা বললেন জামায়াত আমির
Published: 17th, April 2025 GMT
আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে তিনটি শর্ত পূরণের কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলাম। শর্তগুলো হলো- সংস্কার, ফ্যাসিস্টদের বিচার ও সঠিক নির্বাচন পদ্ধতি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়। এই সময়ের আগে বা পরে নির্বাচন হতে পারে, যদি শর্তগুলো পূরণ হয়। সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক দলকে সরকারকে সহায়তা করা উচিত। যত দ্রুত তারা সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করবে, তত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য ও মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, জামায়াত ৪১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, বিএনপি ৩১ দফা, অন্যরা ৫৬-৫৭ দফা প্রস্তাব করেছে। তবে জামায়াত শুধুমাত্র ছয়টি মৌলিক সংস্কার চায়। ফ্যাসিস্টদের বিচার এমনভাবে হওয়া উচিত, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। নির্বাচনকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যাতে কেউ সহজে প্রক্রিয়াটি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। এ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে আরও সংলাপ ও আলোচনা প্রয়োজন।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, তারা এই বিচারের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছেন না। কিন্তু এটা তাদের দাবি। সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সফরের সময় তাঁরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তারা কেবল খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফরের সময় তারা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দূতাবাস খোলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে সম্মিলিত সহযোগিতা চেয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি ৮ প্রাক্তন ভিসিসহ ২০১ জন
ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন।
মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ।
মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়।