খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘সি’ ও ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা। এতে কলা ও মানবিক, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, শিক্ষা এবং চারুকলা স্কুলের অন্তর্ভুক্ত বিষয়ে আবেদনকারীরা অংশ নেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় খুলনার দেলদার আহমেদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রেভারেন্ড পলস্ হাই স্কুল, কেসিসি উইমেন্স কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ এবং দুইটি বহিঃকেন্দ্র—বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট)।

আরো পড়ুন:

ব্যতিক্রমী একাডেমিক ক্যালেন্ডারে সেশনজট মুক্ত খুবি

খুবিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু বৃহস্পতিবার

‘সি’ ইউনিটে মোট ৩২ হাজার ২৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২৪ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্থানীয় কেন্দ্রগুলোতে ১৩ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১১ হাজার ২৭ জন, বুয়েট কেন্দ্রে ১১ হাজার ৩৮১ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৭ হাজার ২৯৫ জন এবং রুয়েট কেন্দ্রে ৭ হাজার ৫৫১ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৫ হাজার ৮৬১ জন।

এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চারুকলা স্কুলে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ড্রইং পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়।

পরীক্ষা চলাকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় কেন্দ্রগুলোর কন্ট্রোল রুম ও পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো.

রেজাউল করিম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুনর রশীদ খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. নাজমুস সাদাত প্রমুখ।

পরীক্ষা শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে উপস্থিত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে এবার প্রথমবারের মতো খুলনার পাশাপাশি ঢাকা ও রাজশাহীতেও পরীক্ষা আয়োজন করা হয়েছে। অভিভাবকরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এছাড়া তাদের বিশ্রাম সুবিধা প্রদানের জন্যও প্রশংসা করেন।

এরপর দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ‘ডি’ ইউনিটের (ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুল) ভর্তি পরীক্ষা। এতে ৪ হাজার ১৫৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২ হাজার ৪৩০ জন।

আগামীকাল ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ‘বি’ ইউনিটের (জীববিজ্ঞান স্কুল) ভর্তি পরীক্ষা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, দেলদার আহমেদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও হোপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে অংশ নেবেন ৭ হাজার ৮৭৪ জন পরীক্ষার্থী। পাশাপাশি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৩ হাজার ৬৮৪ জন এবং রুয়েট কেন্দ্রে ৬ হাজার ৩৮৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।

একইদিন বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল) ভর্তি পরীক্ষা। এই পরীক্ষা হবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, দেলদার আহমেদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রেভারেন্ড পলস্ হাই স্কুল এবং হোপ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। খুলনায় অংশ নেবেন ১১ হাজার ১৫৬ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২১ হাজার ৫৬০ জন এবং রুয়েট কেন্দ্রে ৮ হাজার ৪৬৩ জন পরীক্ষার্থী।

এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত স্থাপত্য স্কুলে আবেদনকারীদের জন্য পৃথক ড্রইং পরীক্ষাও নেওয়া হবে।

ঢাকা/হাসিব/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপস থ ত ছ ল ন উপ চ র য ইউন ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ