যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চার দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। তিনি এমন সময় ভারতে যাচ্ছেন যখন প্রতিদেশী দেশ চীনের সঙ্গে শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। দুই শক্তিশালী দেশের এই দ্বন্দ্বে বিশ্ব অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে দেনদরবারের মধ্যে এই সফরে জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। অন্যদিকে জেডি ভ্যান্সের এ সফরের ঠিক আগ মুহূর্তে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার  গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলো সফর শেষ করেছেন। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে চীনকে একটি স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শি জিনপিং এ সফর করেন। সর্বশেষ দুই দিন আগে তিনি মালয়েশিয়া সফরে ছিলেন। 

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জেডি ভ্যান্সের সফরের কথা জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সফরে দুই দেশই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ দেবে। 

ভ্যান্সের সফরসূচি অনুযায়ী, দিল্লি যাওয়ার আগে আজ শুক্রবার তিনি ইতালি সফরে যাবেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড  ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভ্যান্স। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প এখনও কোনো দেশ সফর করেননি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (২১ এপ্রিল) সফরের প্রথম দিন অর্থনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুতে তাদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। উভয় দেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করছে। 

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া বাকি সব দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। অন্যদিকে অন্য দেশগুলো উচ্চ শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন, কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এই হার ২৪৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তার জবাবে মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন এখন শুল্ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর ফলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি গতি কিছুটা ধীর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই দিল্লি ও ওয়াশিংটন বাণিজ্যিক সমঝোতায় দ্রুত পৌঁছাতে কাজ করে যাচ্ছে। ভারত ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্যের উপর শুল্ক কমিয়েছে এবং ট্রাম্পের হুমকির মুখে আরও বিস্তৃত পরিসরে শুল্ক কাটছাঁটের কথা বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল যুক্তরাষ্ট্র, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পৌঁছেছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলারে। ট্রাম্পের অভিষেকের পরপরই ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং দুই নেতা আলোচনায় বসেছিলেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র শ ল ক আর প শ ল ক আর প র সফর

এছাড়াও পড়ুন:

হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা

তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হরমুজ প্রণালি দিয়ে কোনো জাহাজ চলতে পারবে না। এরই মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়ে গেছে।

এই ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরও জোরদার করবে এবং হরমুজ প্রণালিকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করবে, যা বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।

হরমুজ প্রণালি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল একটি সমুদ্রপথ। এটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত।

প্রণালিটির প্রস্থ খুব বেশি নয়, সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় মাত্র ৩৯ কিলোমিটার, যার মধ্যে কেবল দুটি সংকীর্ণ চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে। তবে ছোট এই পানিপথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের মোট সমুদ্রপথে পরিবাহিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে, যা একে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

হরমুজ প্রণালি দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ইরান প্রায়ই এই প্রণালিকে একটি কৌশলগত চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে, তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিতে পারে, যা গোটা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বারবার এই প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।

ইরানে হামলার পরপরই হরমুজ প্রণালি নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। খবর আলজাজিরার।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হরমুজ প্রণালি বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা