আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মুরাদনগরের রাজনৈতিক মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। শনিবার মুরাদনগরে বিএনপি ও এনসিপি শোডাউন করে জনসভা আহ্বান করেছে। তবে দুই দলের কেউই প্রশাসনের কাছে শোডাউন ও জনসভার অনুমতি চেয়ে লিখিত কোনো আবেদন করেনি বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সংঘাতের আশংকায় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

বিএনপি নেতারা বলেন, ১৯ এপ্রিল শনিবার আন্দিকোট ইউনিয়নের হায়দরাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে পূর্ব থেকেই জনসভার ডাক দিয়েছে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের। জনসভা সফল করতে এলাকায় পোষ্টার  সাটানো ও মাইকিং করে চালানো হয়েছে প্রচারণা।

অপরদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনপিসি) নেতারা বলেন, তারাও একই দিনে (শনিবার) একই সময়ে বিএনপির সভাস্থলের পার্শ্ববর্তী আকবপুর ইউনিয়নের পীর কাশিমপুর হাইস্কুল মাঠে বাঙ্গরা দলটির বাজার শাখার উদ্যোগে জনসভার ডাক দিয়েছে। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়ার বাবা মো.

বিল্লাল হোসেন মাষ্টারের নামে পোষ্টার সাটানোসহ প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

বিএনপির সাথে একই দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টির জনসভা ডাক দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি একটি নতুন দল। তাদেরকে অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি তাদেরকে কখনোই প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করে না। মুরাদনগরে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৯০% ভোট পাবে দাদা কায়কোবাদ।

বিএনপির জনসভার আয়োজনের খরচের উৎস জানতে চাইলে মহিউদ্দিন অঞ্জন সমকালকে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত টাকা এবং দলীয় ফান্ড থেকেই এই জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে। এ সময় তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির জনসভার খরচের বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, মুরাদনগরে প্রত্যেকটি জায়গা থেকে এখন চাঁদাবাজি করছে জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজন।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজনের চাঁদা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মুরাদনগর উপজেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক উবাইদুল হক সিদ্দিকী বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের নিজস্ব অর্থায়নে প্রতিটি অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা নিজেদের চাঁদাবাজি আড়াল করতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দিচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করবে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার মধ্য দিয়ে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান জানান, জনসভা করার বিষয়ে দুই দলের কারো পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি চাওয়া হয়নি। বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি।

অনুমতি না চাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসভা বন্ধ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জনসভ ম র দনগর শ ড উন ব এনপ এনস প ম র দনগর উপজ ল র ন ত কর ম দ র ব এনপ র জনসভ র

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে বৃদ্ধ নিহত

নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইদন মিয়া (৬০)। তিনি মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে মোস্তাকিম (৩০) ও আবুল হোসেন (৬০) নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে গেলে সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। একটি পক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী এবং আরেক পক্ষে সদ্য বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুল কাইয়ুম মিয়া নেতৃত্ব দেন। মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলাসহ নানা অভিযোগে সম্প্রতি দলীয় পদ থেকে বহিষ্কৃত হন আবদুল কাইয়ুম। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয় থাকার বিষয়টি মানতে পারছিল না শাহ আলম পক্ষ।

অভিযোগ আছে, আবদুল কাইয়ুমকে ঠেকাতে শাহ আলম চৌধুরীর ইন্ধন ও হস্তক্ষেপে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের আবার এলাকায় ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়। এর অংশ হিসেবে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এলাকায় ফিরতে শুরু করে আত্মগোপনে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ খবর পেয়ে আবদুল কাইয়ুমের সমর্থকেরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষ টেঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ইদন মিয়াসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ইদন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবীর। তিনি জানান, ইদন মিয়াকে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনায় হয়। ওই সময় তিনি মৃত ছিলেন। মরদেহ এই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে শাহ আলম চৌধুরী ও আবদুল কাইয়ুম মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে বৃদ্ধ নিহত