চলমান শুল্কযুদ্ধে যেসব দেশ চীনের স্বার্থের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করছে, তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং। আজ সোমবার চীনা কর্তৃপক্ষ এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও অনেক চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। এর জবাবে বেইজিং মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের বিরুদ্ধে যখন পুরোদমে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে, তখন বেশ কয়েকটি দেশ শুল্ক কমানোর জন্য ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়া। চলতি সপ্তাহে দেশটির অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীর ওয়াশিংটনে উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা আছে বলে জানিয়েছে সিউল কর্তৃপক্ষ। হোয়াইট হাউস যদি তাদের ঘোষণা অনুযায়ী শুল্ক কার্যকর করে, তবে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিকস ও হুন্দাইয়ের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা গত শনিবার বলেছেন, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার আলোচনা বিশ্বের জন্য একটি মডেল হতে পারে। টোকিওর শুল্কবিষয়ক প্রতিনিধি রিয়োসি আকাজাওয়া গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন।

আজ জাপানের পার্লামেন্টে ইশিবা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহের (জাপানের দূতের সঙ্গে আলোচনার জন্য) মধ্য দিয়ে বোঝা যায়, তিনি জাপানের সঙ্গে আলোচনাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করছেন।’

নিজের দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে উল্লেখ করে ইশিবা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী ও কর্মসংস্থানকারী দেশ জাপান।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স আজ থেকে ভারতে চার দিনের সফর শুরু করছেন। তিনি এমন সময়ে সফর করছেন, যখন কিনা দুই দেশ একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপস না করতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।

এক বিবৃতিতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘তুষ্ট করার মধ্য দিয়ে শান্তি আসবে না এবং আপসকে সম্মানজনক দৃষ্টিতে দেখা হবে না।’

বেইজিং আরও বলেছে, ‘অন্যের স্বার্থের বিনিময়ে নিজের সাময়িক স্বার্থ হাসিল করাটা বাঘের চামড়া চাওয়ার শামিল।’

এ ধরনের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষই ব্যর্থ হয় এবং অন্যরা ক্ষতির শিকার হয় বলে সতর্ক করেছে চীন। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, চীনের স্বার্থের বিনিময়ে যেকোনো পক্ষের চুক্তিতে পৌঁছানোর তীব্র বিরোধিতা করে তাঁর দেশ। যদি এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়, তাহলে চীন কখনোই তা মেনে নেবে না এবং দৃঢ়ভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা শুল্ক ‘সম্পূর্ণ বাতিল’ করার আহ্বান চীনের১৪ এপ্রিল ২০২৫

ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোর মধ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাজারগুলোয় অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা করছে। তিনি আত্মবিশ্বাসী যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশ দুটি তিক্ত বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি চুক্তি করতে পারবে।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা চীনের সঙ্গে কথা বলছি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা চীনের সঙ্গে মিলে খুব ভালো একটি চুক্তি করতে পারব।’

তবে শেষ পর্যন্ত শুল্কযুদ্ধের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট আলোচনা হওয়ার বিষয়ে তারা কিছু বলেনি। তবে তারা সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

নায়িকা হতে আসিনি, তবে...

গুটি, সুড়ঙ্গ, মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন থেকে ওমর—সব সিনেমা-সিরিজেই প্রশংসিত হয়েছে আইমন শিমলার অভিনয়। অল্প সময়ের উপস্থিতিতেও নিজের ছাপ রাখতে পেরেছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। ধূসর চরিত্রেও তিনি সাবলীল, অন্য তরুণ অভিনেত্রীদের থেকে এখানেই আলাদা শিমলা। তবে একটা কিন্তু আছে। এখন পর্যন্ত তাঁর অভিনীত আলোচিত চরিত্রগুলোর সবই চাটগাঁইয়া। শিমলা নিজে চট্টগ্রামের মেয়ে, একটা সময় পর্যন্ত বন্দরনগরীর বাইরে চেনাজানা ছিল সীমিত। এক সিরিজে তাঁর চাটগাঁইয়া ভাষা আলোচিত হওয়ায় পরপর আরও কাজে তাঁকে চাটগাঁইয়া চরিত্রের জন্য ভেবেছেন নির্মাতা।

এ প্রসঙ্গ দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপের শুরু করা গেল। শিমলা জানালেন, এ নিয়ে তাঁর নিজেরও অস্বস্তি আছে। চেষ্টা করছেন ‘চাটগাঁইয়া দুনিয়া’র বাইরে যেতে। সঙ্গে এ–ও জানিয়ে রাখলেন, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাঁর নিজের চরিত্র পছন্দ করে নেওয়ার সুযোগ কমই ছিল।

‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুটিংয়ের ঠিক আগে জেনেছি চরিত্রটি সম্পর্কে। তখন তো কিছু করার থাকে না। তবে যেসব কাজ করেছি, সবই আলোচিত পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে; এ অভিজ্ঞতার মূল্যও কম নয়। শিহাব (শিহাব শাহীন) ভাইয়ের সঙ্গে মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, কাছের মানুষ দূরে থুইয়া, রবিউল আলম রবি ভাইয়ের সঙ্গে ফরগেট মি নট আমাকে সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া (শহীদুজ্জামান) সেলিম ভাইয়ের কথা বিশেষভাবে বলব। সুড়ঙ্গ ও ওমর—দুই সিনেমায় তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন,’ বলছিলেন তিনি।

ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিমের সিনেমা জংলিতেও আছেন শিমলা। এ ছবিতে অবশ্য তাঁর চরিত্রটি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে না। সে জন্য সিনেমাটি নিয়ে তিনি বেশি উচ্ছ্বসিত। ‘মুক্তির পর থেকে সিনেমা তো বটেই, আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছি কিন্তু দুঃখের কথা, আমি নিজেই এখনো দেখতে পারিনি। ব্যক্তিগত ঝামেলা, শুটিংয়ে ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। শিগগিরই আমার টিমের সঙ্গে দেখতে চাই,’ বলছিলেন তিনি।

আইমন শিমলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ