সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় অবস্থিত রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন দেশের একমাত্র কংক্রিট স্লিপার প্লান্টটিতে প্রায় এক মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ কারখানায় সর্বশেষ স্লিপার উৎপাদনের পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে স্লিপার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। প্লান্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে যান্ত্রিক সমস্যা দূর করে স্লিপার উৎপাদন শুরু হবে। 
জানা যায়, কংক্রিট স্লিপার তৈরির প্রধান কাঁচামাল বালু, পাথর ও সিমেন্ট একই জায়গায় সহজ প্রাপ্তির কারণে ১৯৮৮ সালের ২৭ অক্টোবর ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্টে উৎপাদন শুরু হয়। রেললাইনের এসব স্লিপারের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো হওয়ায় এটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কাঁচামাল প্রাপ্তির সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও রহস্যজনক কারণে কারখানাটির উৎপাদন মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। গত ৩ জানুয়ারি ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট পরিদর্শনকালে রেলওয়ের মহাপরিচালক মো.

আফজাল হোসেন জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমে প্লান্টটিতে ১৫ হাজার স্লিপার উৎপাদনের পর এটি আরও আধুনিকায়ন করে উৎপাদন বাড়ানো হবে। কিন্তু রেলওয়ের মহাপরিচালক পরিদর্শনের পরও একাধিকবার প্লান্টটি বন্ধ থাকে। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২৫ দিন প্লান্টটি চালু ছিল। 
স্লিপার প্লান্টে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকে তালা দেওয়া। স্লিপার প্লান্ট এলাকায় সুনসান নীরবতা। কর্মরত শ্রমিকরা হাজিরা দিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্লান্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফোরম্যান আসাদুজ্জামান খান বেশ কিছুদিন ধরে নিজ কর্মস্থলে নেই। 
একাধিক শ্রমিকের অভিযোগ, কাঁচামাল, বালু, সিমেন্ট থাকা সত্ত্বেও কারখানা বারবার বন্ধ হচ্ছে। এটি বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বারবার কারখানা বন্ধের পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। 
কংক্রিট স্লিপার প্লান্টের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের সাইট ম্যানেজার কবির হোসেন জানান, কারখানার রাবার প্যাড নষ্ট হওয়ায় স্লিপার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কারখানার মিক্সার মেশিনেও সমস্যা ছিল, এটিও দূর করা হয়েছে। রাবার প্যাড সরবরাহ হলেই স্লিপার উৎপাদন শুরু হবে। 
ছাতক বাজার রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (এপিএন) মো. আহসান হাবিব বলেন, কারখানায় কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কংক্রিট স্লিপার উৎপাদন বন্ধ ছিল। ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। শিগগিরই মেশিনারি সমস্যা দূর করে প্লান্টে স্লিপার উৎপাদন শুরু হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র লওয র লওয় র ন বন ধ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।

গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ