রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বর্তমানে ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া ঢাকা সিটি কলেজ দুইদিন বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে। 

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুর ১টার দিকে লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।  

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসীন উদ্দীন জানান, দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সড়ক বন্ধ ছিল। পরে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।  

সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোবারক হোসেন বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। আগামী দুই দিন অর্থাৎ বুধ ও বৃহস্পতিবার সিটি কলেজ বন্ধ রাখা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি বলেন, সিটি কলেজের স্থাপনায় যে হামলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে সেটির অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত। এ ঘটনাগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। মারামারি করে এসব সমস্যার সমাধান হবে না বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘এতে সিটি কলেজের স্থাপনার ক্ষতি হবে, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে এবং আশপাশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের কাছাকাছি চলে আসেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় পুলিশকে লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনা ঢাকা কলেজের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রতিশোধ নিতে আজ মঙ্গলবার সকালে সিটি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১১টার পর তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুর ১টার দিকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে যার যার ক্যাম্পাসের দিকে নিয়ে যায়।

নিউমার্কেট থানার ওসি মোহসীন উদ্দীন বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জেনেছি। এ ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।

এছাড়া ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের সংঘর্ষে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক ধ নমন ড দ ই কল জ র শ ক ষ র থ দ র স ঘর ষ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ