দুদকের তিন মামলায় স্ত্রী-কন্যাসহ লিটনের ২৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
Published: 22nd, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও তার স্ত্রী শাহীন আকতার, মেয়ে আনিকা ফারিহার অবৈধ সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২৯ কোটি টাকা, যার সন্ধান পাওয়ার দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
দুদক জানতে পেরেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে খায়রুজ্জামান লিটন নিজে এবং স্ত্রী-কন্যার নামে এই সম্পদ অর্জন করেছেন। ঘুষ দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচারও করেছেন। তাদের সবার একাধিক ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসার পরিপ্রেক্ষিতে খায়রুজ্জামান লিটন এবং তার স্ত্রী শাহীন আকতার, মেয়ে আনিকার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুদক।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুদকের মহাপরিচালক মো.
তিনটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের প্রথম মামলায় খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সেই সঙ্গে তার নামের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৫২ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শাহীন আকতার তার স্বামীর সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাবে ৭৬ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮০২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। মামলায় স্ত্রী শাহীন আকতারের সঙ্গে আসামি হয়েছেন খায়রুজ্জামান লিটন।
তৃতীয় মামলায় মেয়ে আনিকার বিরুদ্ধে তার বাবার সহযোগিতায় দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার নামের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত হয়েছে। এ মামলায় খায়রুজ্জামান লিটনকেও আসামি করা হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে সরকার পতনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন লিটন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর লিটনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর কথা জানায় দুদক। গত ৬ মার্চ খায়রুজ্জামান লিটন, তার স্ত্রী শাহীন আক্তার, দুই মেয়ে আনিকা ও মায়সা সামিহা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন আদালত।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ হ ন আকত র ক ষমত র
এছাড়াও পড়ুন:
মোজাম্মেলের অবৈধ সম্পদ ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, দুদকের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে সংস্থাটির নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আ ক ম মোজাম্মেল হক ১০ কোটি ৩৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তিনটি ব্যাংকে ৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাক সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, আ ক ম মোজাম্মেল হকের ঋণ বাদে স্থাবর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১২ কোটি ৫৪ লাখ ২১ হাজার ২৮০ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ১ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ২৭৭ টাকা। ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ১৩ কোটি ১৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭ টাকা। তার মধ্যে গ্রহণযোগ্য আয় হলো ২ কোটি ৮২ হাজার ৯০ লাখ ৬৩০ টাকা আর জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ হলো ১০ কোটি ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪২৭ টাকা। এই টাকা তিনি ভোগদখলে আছেন। একই সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠানসমূহের নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়েছেন ৪ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৭ টাকা। উত্তোলন করেছেন ৪ কোটি ১৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৭ টাকা। সন্দেহজনক মোট লেনদেন করেছেন ৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ১১৪ টাকা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ