সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে
Published: 22nd, April 2025 GMT
বর্তমান সময়ে সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে এবং তা মানবজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা। তাঁরা বলেছেন, সাম্রাজ্যবাদ সংকটে পড়লেই নতুন নতুন পাঁয়তারা সৃষ্টি করে তার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই চালাতে গিয়ে লেনিনের কাছে বারবার ফিরে যেতে হয়।
রুশ বিপ্লবের নায়ক ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভ লেনিনের জন্মদিন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সিপিবির নেতারা এসব কথা বলেন।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান। সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ। এ ছাড়া মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন শংকর আচার্য, বিকাশ সাহা, কল্লোল বণিক প্রমুখ।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, লেনিনের চিন্তা ও সংগ্রাম আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। সাম্রাজ্যবাদ তার আগ্রাসী থাবা বিশ্বব্যাপী আরও বিস্তৃত করতে চাইছে। বর্তমান সময়ে সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে এবং তা মানবজাতির জন্য হুমকিস্বরূপ। সাম্রাজ্যবাদ সংকটে পড়লেই নতুন নতুন পাঁয়তারা সৃষ্টি করে তার নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
লেনিনের আদর্শ ও বিপ্লবী তত্ত্ব আজও শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অনন্ত প্রেরণা জোগায় বলে উল্লেখ করেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সাম্রাজ্যবাদ নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক দর্শনের প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দেশে দেশে সংগ্রাম চলার কথা উল্লেখ করেন অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, নতুন রূপে সাম্রাজ্যবাদ দেশে দেশে বাণিজ্যযুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদের বৈশিষ্ট্যগুলো আরও সংহত হয়েছে।
মূল প্রবন্ধে শাহীন রহমান বলেন, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই চালাতে গিয়ে বারবার লেনিনের কাছে ফিরে যেতে হয়। সে সময়কালের সাথে বর্তমান সাম্রাজ্যবাদ নতুন নতুন উপায়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।