বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মনোগ্রাম বা লোগো এবং ইউনিফর্মের বিষয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন লোগোতে রয়েছে পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা, দুই পাশে ধান ও গমের শীষের ছবি। উপরের অংশে তিনটি পাটপাতা যুক্ত, নিচে লেখা ‘পুলিশ’। 

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র জানায়, প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় এখন পুলিশের পোশাক, যানবাহন, সাইনবোর্ড, স্থাপনা ও নথিপত্রসহ সব কিছুতেই এই লোগো ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা দিয়ে এর আগেই পুলিশের সব ইউনিটে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে জেলা বা ইউনিটের ব্যবহৃত পতাকা, সাইনবোর্ড, ইউনিফর্মসহ অন্যান্য সামগ্রীতে পরিবর্তিত লোগো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করা হয়। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুলিশের নতুন লোগোতে বাদ দেওয়া হয়েছে পাল তোলা নৌকা। লোগোর পাশাপাশি নতুন পোশাকের বিশদ বর্ণনাও রয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১১ আগস্ট তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশের ইউনিফর্ম ও লোগোতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়। পরদিন পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি (লজিস্টিকস) মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়াকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ