বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হত্যায় জবানবন্দি দিলেন মাহাথির
Published: 24th, April 2025 GMT
ঢাকায় বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (পারভেজ) হত্যা মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মো. মাহাথির হাসান (২০) নামের এক আসামি।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মাহাথির হাসান আদালতকে বলেছেন, হত্যার সময় তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। পূর্বপরিচিত দুজন নারী শিক্ষার্থী ফোন করে অভিযোগ করেছিলেন জাহিদুল তাঁদের দেখে অশোভন ভঙ্গি ও হাসাহাসি করেছেন। তাই তিনিসহ তিনজন ঘটনাস্থলে যান। পরে ওই দুই নারী শিক্ষার্থীর পূর্ব পরিচিত মেহেরাজ ইসলামসহ অন্যরা জাহিদুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুনপ্রাইম এশিয়ার শিক্ষার্থী জাহিদুল হত্যায় চট্টগ্রাম থেকে এক আসামি গ্রেপ্তার২৩ এপ্রিল ২০২৫গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি বাসা থেকে মাহাথির হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করা হয়।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, গতকাল আল কামাল শেখ ওরফে কামাল এ হত্যা মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা হলেন মেহেরাজ ইসলাম, আলভী হোসেন জুনায়েদ, আল আমিন ও মো.
পুলিশ বলছে, ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধু তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত জাহিদুলকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় জাহিদুলের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুনজাহিদুল হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত দুই নারীর অবস্থান জানতে চান আদালত২৩ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়