গাজীপুরের শ্রীপুরে ফুটপাতের অস্থায়ী বাজারে খাজনা আদায়কে কেন্দ্র করে ইজারাদার ও হকারদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে, বন্ধ রয়েছে ফুটপাতের দোকানপাট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করে কিছু দিন ধরে ইজারাদারের লোকজন ফুটপাতের দোকানিদের কাছ থেকে খাজনা আদায় শুরু করলে অসন্তোষ দেখা দেয়। শুক্রবার খাজনা আদায় করতে গেলে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়, পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়।

মাওনা বাজারের ইজারাদার মো.

কাজল ফকির বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে আমরা ইজারা নিয়েছি এবং খাজনা আদায় করছি। কিন্তু হকাররা ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের লোকজনকে মারধর করে। আমাদের ১৫ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনজন গুরুতর।”

অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে এখানে ব্যবসা করি। কোনো দিন খাজনা দেইনি। এখন জোর করে রসিদ ধরিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আমরা অতিরিক্ত খাজনার বিরুদ্ধে কথা বললে তারা হামলা করে।”

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বিজন মালাকার জানিয়েছেন, আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, “মাওনা চৌরাস্তার অস্থায়ী বাজারের বৈধ ইজারা দেওয়া হয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইজ র দ র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ