খাতা দেখতে না দেওয়ায় সহপাঠীদের মারধরে আহত পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
Published: 26th, April 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় এনায়েতপুর কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে খাতা দেখতে না দেওয়ায় সহপাঠীদের মারধরে আহত ইমন হোসেন (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী মারা গেছে। গত শুক্রবার খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল তাকে মারধর করা হয়েছিল।
নিহত ইমন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের ইমদাদুল মোল্লার ছেলে। সে স্থানীয় খুকনী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও দুটি থানার সীমানা এলাকা হওয়ায় এ ঘটনায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত মামলা নেয়নি পুলিশ। এদিন পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে বেলকুচি থানায় মামলা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
নিহত ইমনের বাবা ইমদাদুল মোল্লা জানান, গত ১৭ এপ্রিল এনায়েতপুর ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন সহপাঠী ইমনের খাতা দেখে পরীক্ষা দিতে চায়। এতে সে রাজি হয়নি। পরদিন শুক্রবার দুই সহপাঠী তাকে ডেকে নিয়ে যায়। পাশের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর নতুনপাড়ায় নিয়ে গিয়ে কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করে।
মারধরে ইমনের মাথার বাম পাশের খুলি ভেঙে যায়। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। বুধবার তাকে বাড়িতে আনা হয়েছিল। শুক্রবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সে মারা যায়।
ইমদাদুল মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলে ভদ্র এবং মেধাবী ছিল। নকল করতে না দেওয়ায় তাকে এভাবে হত্যা করা হবে, কখনও ভাবিনি।’ অভিযুক্তদের শাস্তি দাবির পাশাপাশি দুই থানা মামলা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
খুকনী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তোতা মিয়া বলেন, মারধরের ঘটনার পর কয়েকবার এনায়েতপুর ও বেলকুচি থানায় মামলা করতে যান স্বজনরা। দুই থানার সীমানা জটিলতা দেখিয়ে পুলিশ মামলা নেয়নি। এনায়েতপুর বলছে বেলকুচিতে মামলা হবে। আর বেলকুচি বলছে মামলা হবে এনায়েতপুরে থানায়।
এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানি শনিবার বিকেলে বলেন, শিক্ষার্থী ইমনের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের পর শুক্রবার রাতে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ সুপার বিষয়টি জেনে বেলকুচি থানায় মামলা করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া ইসলাম শনিবার বিকেলে বলেন, শিক্ষার্থী ইমন বেলকুচিতে মারধরে আহত হলেও মারা যায় এনায়েতপুরে। তাদের বাড়ি এনায়েতপুর থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সেখানে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সুপার বেলকুচিতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। দাফন শেষে স্বজনরা এলে অভিযোগ নেওয়া হবে। সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বেলকুচি থানায় মামলা করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম রধর শ ক রব র ব লক চ র র পর পর ক ষ ইমন র সহপ ঠ ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মাইলস্টোন ছাত্রীর মৃত্যু
রাজধানীর আফতাবনগর এলাকায় বাসার ছাদ থেকে পড়ে মাইলস্টোন স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তানহা (১৪) মারা গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে বৃষ্টিতে ভিজতে ছাদে উঠেছিল সে।
তানহার বোন তাবাসসুম বলেন, বৃষ্টিতে ভেজার সময় হঠাৎ ছাদ থেকে পড়ে যায় তানহা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তানহা পাবনা সদর উপজেলার আব্দুস সালামের মেয়ে। আফতাবনগর পাসপোর্ট অফিসের পাশে পরিবারের সঙ্গে থাকত সে।
এদিকে একই দিন দুপুরে গুলিস্তান মহানগর নাট্যমঞ্চ পার্কের পুকুরে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায় ইয়াসিন ওরফে নিরব (১৫)। তার বন্ধু জুবায়ের আহমেদ জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে কয়েকজনের সঙ্গে গোসল করতে নামে নিবর। এ সময় পানিতে ডুবে গেলে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সে সৈয়দপুরের মৃত এনায়েত হোসেনের ছেলে। গুলিস্তানে ফুটপাতে সে ঘড়ি বিক্রি করত।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক জানান, দু’জনের লাশ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দুই ঘটনায় আলাদা থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে।