চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
Published: 27th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ সফরে আসা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে এ বৈঠক হয়।
প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকটি ছিল একটা পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে আরেকটা দেশের পলিটিক্যাল পার্টির মিটিং। আমাদের সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক অনেক পুরোনো। মাঝখানে ১৫ বছর ওই যোগাযোগটা ছিল না। কারণ, ফ্যাসিস্ট সরকার সেটা অ্যালাউ করেনি। এখন আবার সেটা রিভাইভ করেছি। ফলে চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। আমাদের দুই পার্টির সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।’
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে ছিলেন। চীনের প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন চেন জুয়ানবো, চেন ইয়াংপেই, ঝাং গুইউ, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের পরিচালক ঝাং জিং এবং লিউ হংরু।
মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবীর, মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার।
বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি যে প্রশ্ন করেছেন রিগার্ডিং ইলেকশন এটা তো আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি খুব ভালো করে জানেন, চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টি বা চায়নিজ গভর্নমেন্ট তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে তারা জেনেছে যে নির্বাচনের ব্যাপারে পরিস্থিতি কী, দেশে বর্তমান পরিস্থিতি কী…আমরা সেটা তাদের ব্রিফ করেছি।’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চীন কী আশা করছে, জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা (চীন) সব সময় বাংলাদেশে একটা স্থিতিশীলতা চায়, একটা শক্তিশালী বাংলাদেশ দেখতে চায়, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় এবং দেশে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায়।
পরে চীনের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের অংশ হিসেবে আজকে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুই দেশের সম্পর্কের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে…কীভাবে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সদস য ব এনপ র আম দ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে নারী অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে জুতাপেটা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে মধুপুরের আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিলে আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল জব্বার। গতকাল দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকজন নারী অভিভাবক তাঁর কক্ষে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। এ সময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন তাদের হাত থেকে শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করেন। এতে তাদের ওপরও ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।
হামলায় অংশ নেওয়া জাহিন ওরফে জাহি ও ঝুমা বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার পড়ানোর সময় মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। একই অভিযোগ করেন সুমি বেগম নামে আরেকজন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমি বিষয়টি সকালেই জানতে পেরে স্যারকে জানিয়েছিলাম। স্যার তখন অফিস কক্ষেই ছিলেন। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। এক পর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে তাঁকে হামলাকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করি।’
মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করত। তাকে বিভিন্ন সময়ে বোঝানো হয়েছে। কথা না শোনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।