ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪
Published: 27th, April 2025 GMT
ইরানের বন্দর আব্বাসের কাছে শহীদ রাজয়ি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৪ হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৭৫০ জন। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা এ কথা জানিয়েছে।
ইরনা জানিয়েছে, শহীদ রাজয়ি বন্দর ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত। এটি ইরানের সবচেয়ে উন্নত কনটেইনার বন্দর। বন্দর আব্বাস শহরের ২৩ কিলোমিটার পশ্চিমে ও হরমুজ প্রণালির উত্তরে অবস্থিত এই কনটেইনার বন্দর। এ প্রণালি দিয়ে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল পরিবহন করা হয়।
শনিবারের ওই বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরও রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বন্দর এলাকা থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উড়ছে এবং সেখানে জ্বলতে থাকা বহু কনটেইনারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের সংকট ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন জাফরি শহীদ রাজয়িতে থাকা কনটেইনারগুলোয় রাসায়নিকের অনিরাপদ মজুত বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বিস্ফোরণের কারণ কনটেইনারের ভেতরে থাকা রাসায়নিক।’
হোসেইন জাফরি আরও বলেন, এর আগেও সংকট ব্যবস্থাপনা সংস্থার মহাপরিচালক পরিদর্শনের সময় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন, সম্ভাব্য বিপদের কথা বলেছিলেন।
অন্যদিকে ইরানের সরকারি মুখপাত্র বলেন, বিস্ফোরণের পেছনের কারণ হতে পারে রাসায়নিক। তবে সুনির্দিষ্ট কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আগুন নেভানো ও অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বিস্ফোরণের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর স্থানীয় প্রেস টিভির ফুটেজে দেখা যায়, আগুন বেশ তীব্র আকার ধারণ করেছে। আশপাশে কালো ধোঁয়া এতটাই ছড়িয়েছে যে ২৩ কিলোমিটার দূরের হরমোজগান প্রদেশের রাজধানী শহর বন্দর আব্বাসে সব বিদ্যালয় ও অফিস আজ রোববার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রচেষ্টায় মনোনিবেশ করতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?