আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে হাতে গোনা কয়জন অর্থনীতিবিদই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যতে শিশুমৃত্যুর হার ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে কমবে। অথচ তখন ভারতের মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন শুধু বেশিই ছিল না, বরং বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ছিল দ্রুততর। এমনিতে ভারতে শিশুমৃত্যুর হার নিচের দিকেই থাকে, কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবধান বাড়তে শুরু করলে প্রথম প্রথম ভাবা হতো, এই পার্থক্য ভারতের অনুকূলেই যাবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘটল ঠিক উল্টোটা। বাস্তবে ভারতের উল্লম্ফন ঘটল বটে, তবে তা সামনে নয়, পেছনের দিকে।

শেষ পর্যন্ত দুই দশক আগে বিষয়টি যখন ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করল, প্রথমে তা একধরনের স্বল্পমেয়াদি অসংগতি বলে মনে করা হলো। কারণ, ভাবা হতো, ভারত মাথাপিছু দেশজ উৎপাদনে উচ্চতর অবস্থানে থেকে ও উচ্চ গতির আর্থিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে এবং সামাজিক সুরক্ষায় বড় মাপের ব্যয় করে ও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বদৌলতে আজ হোক কাল হোক, বাংলাদেশকে টপকে যাবে। কিন্তু হায়! ভাবলেই সেটি বাস্তব হয়ে যায় না। যা আশা করা হচ্ছিল, প্রকৃতপক্ষে তার বিপরীতই ঘটল। তথ্য–উপাত্ত সাক্ষ্য দিচ্ছে, মানব উন্নয়নের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সূচকে বাংলাদেশ ভারতকে অতিক্রম করেছে। এটি শুধু শিশুমৃত্যুর হারেই নয়, বরং সাধারণভাবে শিশু উন্নয়ন থেকে শুরু করে জন্মের সময় বেঁচে থাকার প্রত্যাশিত আয়ু (প্রচলিত শব্দচয়নে গড় আয়ু), স্কুলশিক্ষায় অংশগ্রহণ, লিঙ্গসমতাসহ আরও অন্য সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের তুলনায় পেছনে পড়েছে লজ্জাজনকভাবে, যেমন স্যানিটারি বা পাকা পায়খানার ব্যবহার যার বড় দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশে ২০১১ সালের মধ্যেই উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ কার্যত শূন্যে চলে আসে, যদিও ভারতে তা ব্যাপক আকারেই আছে।

আনইকুয়াল বইয়ের প্রচ্ছদ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন

রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।

ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।

অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।

ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।

স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।

ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ