গত সপ্তাহে কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার পর পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের সামিরক আক্রমণ আসন্ন ছিল বলে দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে এ কথা বলেছেন তিনি।

আজ সোমবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে নিজের কার্যালয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একটি সাক্ষাৎকার দেন খাজা মুহাম্মদ আসিফ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে নতুনভাবে মোতায়েন করেছি। কারণ, এটা (ভারতের হামলা) এখন আসন্ন। এমন পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন১৬ পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ করল ভারত, বিবিসিকে কড়া বার্তা৫ ঘণ্টা আগে

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারতের বাগাড়ম্বর ক্রমেই বাড়ছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার বিষয়ে সরকারকে অবহিত করেছে। তবে কেন তিনি ভারতের হামলা আসন্ন বলে মনে করছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ পর্যটক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, হামলার সঙ্গে ইসলামাবাদ জড়িত। ইসলামাবাদ তা নাকচ করে দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে হামলার জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে করা ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আরও পড়ুনপাকিস্তান-ভারতের উত্তেজনা কি কমাতে পারবে সৌদি আরব৯ ঘণ্টা আগে

পেহেলগামের হামলার পর ভারত দুজন সন্দেহভাজন হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে, যাঁরা পাকিস্তানি বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। কিন্তু হামলার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার কথা বারবার অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় এই হামলার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তান সম্পূর্ণ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে খাজা আসিফ রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি’ এলেই কেবল আমরা পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করব।

আরও পড়ুনভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বেইজিং: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী৬ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনকাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে চতুর্থ দিনের মতো গোলাগুলি৬ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম ব দ আসন ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ