বিএনপি ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত ভাত না খাওয়ার ঘোষণা দেওয়া ঝিনাইদহের নিজাম উদ্দিন মন্ডলকে (৭০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আজ বুধবার বেলা একটার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিজামকে দেখতে আসেন বিএনপির প্রতিনিধিদল। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

দলীয় ও পারিবারিক সূত্র বলছে, ২০১৪ সালের ৩০ মে ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কাঙালিভোজের আয়োজন করেন নিজাম। অনুষ্ঠানটি আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের হামলায় পণ্ড হয়ে যায়। হামলাকারীরা রান্না করা খিচুড়ি নষ্ট করে ফেলে দেয়। এরপর নিজাম প্রতিজ্ঞা করেন বিএনপি আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত তিনি ভাত খাবেন না। এর পর থেকে প্রায় ১১ বছর তিনি ভাত খাননি, শুধু রুটি-কলা খেয়ে আসছিলেন।

আজ দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর ছাড়ার আগে নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছি তা ভাঙব না। যত দিন বিএনপি ক্ষমতায় না আসবে, তত দিন ভাত খাব না।’

নিজাম উদ্দিন মন্ডলের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে। তিনি তিন ছেলের বাবা। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। গত সোমবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইনচার্জ দেবব্রত জানান, নিজাম উদ্দিনের ফুসফুসে ক্ষত দেখা দিয়েছে। তাঁর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

দলীয় সূত্র জানায়, নিজামের অসুস্থতার কথা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে তাঁর নির্দেশে ফরিদপুর মেডিকেলে যান দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’–এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমানসহ একটি প্রতিনিধিদল।

রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখানকার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারি তিনি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর এমন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার, যা পিজি হাসপাতালে রয়েছে।’ তিনি জানান, নিজাম উদ্দিনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিএনপি বহন করবে।

হাসপাতালে দেখতে গিয়ে নিজামের হাতে কিছু টাকা তুলে দেন বিএনপির নেতারা। পরে রাজধানীতে নেওয়ার জন্য তাঁকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহতথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক এবং ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আমিরুজ্জামানসহ ফরিদপুর জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে নিজামুদ্দিনের ছেলে শাহাবুল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, সাড়ে তিনটার দিকে তাঁর বাবাকে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব এনপ ব এনপ র ঝ ন ইদহ রহম ন ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার

যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।

জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে। 

এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ