কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে।

আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে মুরাদনগর উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়ি এ উপজেলায়।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ জনতা’র ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুরাদনগরের নিরীহ মানুষদের পুলিশ দিয়ে মামলা ও গ্রেপ্তার, সংবাদমাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে সহযোগিতাকারী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুরের পর মুরাদনগর বাজার গোলচত্বরে জড়ো হন লোকজন। এ সময় তাঁরা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার সময় পুলিশ বাধা দেয়। মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান মিছিলের সামনে গিয়ে ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এ সময় পেছন থেকে একজন ওসিকে হামলা থেকে রক্ষা করেন এবং তেড়ে আসা ব্যক্তিদের সরিয়ে দেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ওসিকে সামনের দিকে নিয়ে যান। ওসি পুলিশ সদস্যদের বারবার মিছিল বন্ধ করতে বললেও কর্মসূচি পালনে কেউ বাধা দেননি। মিছিলটি মুরাদনগর বাজার গোলচত্বর থেকে প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে আবার গোলচত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন নাহিদুল ইসলাম, মো.

রাফি, মীর আসিফ আবদুল্লাহ, আহসান আহমেদসহ স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। তাঁরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে মাইকে উল্লেখ করা হয়।

বক্তারা বলেন, ‘তাঁরা আন্দোলন করেছিলেন বাক্‌স্বাধীনতার জন্য; কিন্তু মুরাদনগরে তাঁরা তা দেখতে পাচ্ছেন না। আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ঢাকায় আন্দোলন হলেও প্রশাসন বাধা দেয় না। তাহলে মুরাদনগরে বাধা কেন? মুরাদনগর আসিফ মাহমুদের নিজের উপজেলা বলে? জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশ স্বৈরাচারমুক্ত হলেও আসিফ মাহমুদের মতো কিছু উপদেষ্টা চেয়ারে বসে দুর্নীতি করে বেড়াচ্ছেন।’ তাঁরা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবি জানান।

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল হক সিদ্দিকী বলেন, বিক্ষোভ মিছিল করা কেউই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লোকজন নন। আওয়ামী লীগের লোকদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচি করেছেন। যে নাহিদুল বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলা কমিটিতে ছিলেন। তবে ছাত্রদলের রাজনীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাঁকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের অনুসারীরা এ কর্মসূচি করেছেন।

জানতে চাইলে ওসি মো. জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা আজ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন, তাঁদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ছিল। এই কর্মসূচির অনুমতি তো দূরের কথা, তাঁদের জানানোও হয়নি। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তাঁরা বাধা দিয়েছেন; কিন্তু সেখানে তাঁর ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছে, ধাক্কা দিয়ে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পদত য গ র দ ব ত ম র দনগর উপদ ষ ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু

কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দুই স্কুলছাত্র বরুড়ার উপজেলার বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপর ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বজ্রপাতে দুই কৃষক মারা গেছেন।

স্থানীয়রা বলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত বীর চরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।

কোরবানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থনের পাশের একটি মাঠে জমিতে ধান কাটছিলেন ওই দুই কৃষক। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলে ওই দুই কৃষক মারা যান। পরে এলাকাবাসী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় খবর দেন।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে দুই জন কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবিতে মুরাদনগরে বিক্ষোভ, পুলিশের বাধা
  • উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ
  • কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু