রাজশাহীতে গরু হাটে নিতে ইজরাদারদের টানাটানি
Published: 4th, May 2025 GMT
রাজশাহীতে দুই পশুহাটের ইজারাদারদের দ্বন্দ্বে গরুবাহী গাড়ি রাস্তায় আটকে পড়ছে। রীতিমতো টানাটানি শুরু হয়েছে হাটে গরু নিতে। রাজশাহীর সিটিহাট ও দামকুড়া পশুহাটে গরু নিতে ইজারাদারদের লোকজন মাঠে নেমে পড়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন পরিচালিত সিটিহাট এবার ইজারা পেয়েছেন শওকত আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি। জেলার পবা উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন দামকুড়া পশুহাট ইজারা নিয়েছেন মোহাম্মদ সাহ জাহান আলী নামে এক ব্যক্তি।
সূত্র জানায়, ১৯৮৯ সালে চালু হওয়া দামকুড়া পশুহাট ২০০৫ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। ওই বছর সিটিহাট চালু হলে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দুই হাটই ইজারা নিয়ে দামকুড়া হাট বন্ধ রাখে। দীর্ঘদিন পর এবার দুই হাট ইজারায় পড়েছে দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি। ফলে দুই পক্ষই নিজেদের হাটে গরু তোলার জন্য মাঠে নেমেছেন। দুইটি হাটই বসে সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার।
আরো পড়ুন:
ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম
কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা
দামকুড়ার ইজারাদার মোহাম্মদ সাহ জাহান আলী অভিযোগ করেছেন, সিটিহাটের লোকজন রাস্তা থেকে গরুবাহী গাড়ি জোর করে তাদের হাটে নিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে তিনি গত ২৯ এপ্রিল বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, যার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৩ ও ২৭ এপ্রিল হাটের দিনে সিটিহাটের লোকজন পলাশবাড়ি, কদমশহর, কাঁকনহাট দরগাপাড়া মোড়, দারুসা হাট হাজির মোড়সহ অন্তত ১০টি স্থানে অবস্থান নেয়। লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গরুবাহী গাড়ি তারা সিটিহাটের দিকে যেতে বাধ্য করেন।
রবিবার (৪ মে) সকালে মুরারিপুর সিদ্দিকের মোড়ে এমন চিত্র দেখা যায়। গরুবাহী নসিমন-করিমনগুলোকে দুই পক্ষ দুইদিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে মহাসড়কে জটলা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দামকুড়া থানা পুলিশ এসে গরুবাহী গাড়িগুলো সিটিহাটের দিকে পাঠিয়ে দেয়। এই ঘটনায় ইজারাদার সাহ জাহান আলী পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আজ দুপুর সোয়া ১টার দিকে দামকুড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, গরু এসেছে অল্পই। হাটে গোদাগাড়ীর কুন্দলিয়া গ্রামের গরু ব্যাপারি আবদুর রহমান মিলন বলেন, “সকাল ৮টায় গরু তুলেছি, এখনো গাড়িতে আছে। জোর করে এখানে ঢোকানো হয়েছে। হাটে তো ক্রেতাই নেই। সিটিহাটে গেলে ভালো হত।”
অপর ব্যাপারি আমতলী গ্রামের রাকিব আলী বলেন, আমি সিটিহাটেই যেতে চেয়েছিলাম। পথে ধরে আমাদের গরু দামকুড়া হাটে নিয়ে আসা হয়েছে। কেউ কেউ জোর করে হাটে ঢোকানোর পর আবার গরু প্রতি ছাড়ের টাকা দিয়ে হাট থেকে বেরিয়ে গেছেন। ক্রেতা বেশি থাকায় তারা গেছেন সিটিহাটে।”
দামকুড়া পশুহাটের ইজারাদার সাহ জাহান আলী দাবি করেন, “আমরা কখনো গরু ঘিরে আনিনি। সিটিহাটের লোকজন প্রথম থেকে এটা করছে। বাধ্য হয়েই আমাদের লোকজন এখন মাঠে নামছে।”
সিটিহাটের ইজারাদার শওকত আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা কাউকে জোর করছি না। ওরাই গরু ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা বলেছি, ব্যাপারিরা যেন নিজের পছন্দের হাটে যেতে পারেন।”
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান বলেন, “দুই হাট একই দিনে হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। পুলিশ মাঠে কাজ করছে। কারো গরু নিয়ে টানাটানির সুযোগ নেই। যিনি যে হাটে যেতে চান, যেতে পারবেন। বিষয়টি নিয়ে কোনো বড় ধরনের উত্তেজনা এখনো নেই। প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গর অভ য গ স হ জ হ ন আল র ইজ র দ র র ল কজন জ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক