নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি টেক্সটাইল কারখানায় গ্যাসের মিটার বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে দুই নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।

নিহতরা হলেন—লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মৃত মো.

শফিকের ছেলে মো. আব্দুল হান্নান (৫০) এবং নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকার মৃত মো. রফিকের ছেলে কবির হোসেন (৪৫)।

তারা দুজনই রূপসী কাজীপাড়া এলাকার জৈনপুরী আশরাফিয়া টেক্সটাইল মিলের নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।

গত ১ মে সকালে কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ থাকা অবস্থায় গ্যাসের অতিরিক্ত চাপে মিটার বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে—এ তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন।

ডা. শাওন বলেন, “শরীরের ৫৩ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন কবির। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি মারা যান। এর আগে রাত ২টা ৪০ মিনিটে আইসিইউতে মারা যান হান্নান। তার শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।”

অগ্নিকাণ্ডে কারখানার চারজন নিরাপত্তাকর্মী দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম (৩২) নামের একজন এখনও বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তার শরীরের ৩৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

আগুন লাগার ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, মে দিবসে কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উচ্চ চাপে গ্যাসের মিটার বিস্ফোরিত হয়। সেখান থেকে আগুন ধরে যায়। এতে চারজন নিরাপত্তা প্রহরী দগ্ধ হন।

বিস্ফোরণের পর ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই কারখানার লোকজন ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিভিয়ে ফেলা হয় বলেও জানান তিনি।

তবে এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী।

তিনি বলেন, ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ফলোআপ রাখছি। তবে কোনো পক্ষ চাইলে এই ঘটনায় মামলা করতে পারেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ