রংপুর শহরের একটি ‎কোচিং সেন্টারের ভিতরে বাইক রাখতে নিষেধ করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

আহত আসাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারিতে।

আটকরা হলেন, শামীম ও সাঈদ মুস্তাকিম। এর মধ্যে সাঈদ মুস্তাকিম রংপুর মহানগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক । 

জানা গেছে, রবিবার (৪ মে) রংপুর চেকপোস্ট কেরানি পাড়ায় অবস্থিত রেডিয়ান্ট কোচিং সেন্টারের ভিতরে মোটরসাইকেল রাখতে নিষেধ করায় ভুক্তভোগী আসাদকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন স্থানীয় ৮-১০ জন যুবক। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিচার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের আশ্বাসে মধ্যরাতে আন্দোলন স্থগিত করেন।

‎এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম আশিক বলেন, “কেরানীপাড়ার রেডিয়ান্ট কোচিংয়ে বাইক রাখা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় এলাকার টোকাই নেশাখোর পোলাপান আসাদকে মারধর ও ছুরির আঘাত করে। এমন কি আসাদের বউকে পর্যন্ত ছাড় দেয়নি তারা। তার বউয়ের গায়েও হাত তোলে।”

তিনি বলেন, “এ রকম টোকাই, চাঁদাবাজদের হাতে প্রতিনিয়ত অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়। এদের এখনই রুখে দিতে না পারলে এরা আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। আমরা চাই এদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।”

‎ভুক্তভোগী আসাদ বলেন, “তাদের আমি বলি, আপনারা কোচিং সেন্টারে বাইক রাখেন, আমাদের সমস্যা হয়। এ কথা বলার পর ৮-১০ জন আমার উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে আমার জুনিয়রসহ অনেকে আমাকে মেডিকেলে নিয়ে আসে।”

‎প্রত্যক্ষদর্শী আসাদের স্ত্রী বলেন, “আমি এসে দেখি ও (আসাদ) বাঁচার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছে। সে অন্যপাশে গেলে তারা খুঁজে বের করে আবারও মারধর শুরু করে। আমি বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারা আমাকেও আঘাত করে। আমি মাটিতে পড়ে গিয়ে শরীরের দুই পাশে আঘাত পেয়েছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন, “গতকালই (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য স্যার সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছেন। আহত শিক্ষার্থীর সব খরচ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করেছে। হামলাকারী যেই হোক, যে দলেরই হোক, কোনো ছাড় পাবে না।

এদিকে, সোমবার (৫ মে) ভোরে এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে নগরীর কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, “আটক দুইজনের নাম শামীম ও সাঈদ মুস্তাকিম। তাদের মধ্যে সাঈদ রাজনীতির সাথে জড়িত।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘ ত কর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় বিবাদমান দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এক যুবদল নেতাসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা জানায়, জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের চেরাগ আলী বেপারিকান্দি এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাসির বেপারী এবং তাজুল ছৈয়ালের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উভয়পক্ষের লোকজন হাতবোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকটি বসতবাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। হাতবোমার আঘাতে যুবদল নেতা সালাউদ্দিন বেপারী, কামাল বেপারীসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। 

আরো পড়ুন:

ড্যাফোডিল-সিটি ইউনিভার্সিটি সংঘর্ষ: শিক্ষার্থীদের আসামি করে পাল্টাপাল্টি মামলা

শিশুদের ঝগড়া থেকে বড়দের সংঘর্ষ, আহত ৫০

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। দুইজনকে আটক করা হয়েছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা এই নাশকতা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

ইউপি সদস্য নাসির বেপারীর স্ত্রী সাবিনা আক্তার বলেন, ‘‘আমরা বাড়িতে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। বোমার শব্দে ঘুমে ভেঙে যায়। উঠে দেখি আমাদের বাড়িতে বোমা হামলা হচ্ছে। জানালার গ্লাস ভেঙে ধোঁয়ার রুম ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষের লোকজন তাজুল ছৈয়াল, মমতাজ বেপারী, মন্নাপ বেপারী, সুজন, রনি ভূঁইয়া, টিপু মাদবর হামলা চালিয়েছে।’’ তিনি দোষীদের বিচারের দাবি জানান। 

আহত সালাউদ্দিনের স্ত্রী সুমি বলেন, ‘‘আমার স্বামী ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। বোমার শব্দে জানালার কাছে গেলে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। পরিকল্পিতভাবে এই হামলা হয়েছে।’’ তিনি জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি দোষীদের শাস্তি চান। 

উল্টো অভিযোগ করেছেন চম্পা আক্তার নামের এক নারী। তিনি বলেন, ‘‘সালাউদ্দিন বেপারী, নাসির বেপারী, ইব্রাহিম বেপারীরা আমাদের বাড়িঘরে বোমা হামলা করেছে। তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে দেবে না। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।’’ যারা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। 

তাজুল ছৈয়ালের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। ঘরটি তালাবদ্ধ ছিল। 

ঢাকা/আকাশ/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, শতাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণ