পাকিস্তান আজ সোমবার ১২০ কিলোমিটার পাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করেছে। ফাতাহ সিরিজের এই ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম। চলমান ‘এক্স সিন্ধু’ নামের সামরিক মহড়ায় প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এমন একসময়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হলো, যখন ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুক হামলার পর পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

আইএসপিআর বলেছে, এই উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ছিল সেনাসদস্যদের অভিযানের প্রস্তুতি নিশ্চিত করা। পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম বা নির্ধারিত পথে নির্ভুলভাবে গন্তব্যে আঘাত হানতে পারে কি না, তা যাচাই করা ও নির্ভুলতা পরিমাপ করা।

সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, কৌশলগত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ফাতাহ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষ করেছেন।

চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি ও সেনাপ্রধান উৎক্ষেপণে অংশ নেওয়া সেনাসদস্য, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের আবদালি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা০৩ মে ২০২৫

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধসক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতায় পূর্ণ আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিবৃতিতে আইএসপিআর বলেছে, ‘পাকিস্তানের ভূখণ্ডে যেকোনো আগ্রাসন মোকাবিলায় সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’

ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণের জন্য বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও গোটা জাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে দেওয়া এক বার্তায় পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জারদারি ‘দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ তিনি জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

আরও পড়ুনসরকার যুদ্ধংদেহী হলেও পাকিস্তানের মানুষ কেন ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চান না১ ঘণ্টা আগে

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও উৎক্ষেপণ প্রস্তুতিতে সংশ্লিষ্ট সেনাপ্রধান, চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান, বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই সফল উৎক্ষেপণ প্রমাণ করে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার ভার এখন শক্তিশালী হাতে রয়েছে।’ তিনি সেনাবাহিনীর পেশাগত দক্ষতা ও পূর্ণ প্রস্তুতির প্রশংসা করেন।

এর আগে শনিবার পাকিস্তান ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার ‘আবদালি’ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য, যা ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

গত বছর মে মাসে ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘ফাতাহ-২’ গাইডেড রকেট সিস্টেমের পরীক্ষামূলক পরীক্ষা চালিয়েছিল দেশটি। উন্নত গাইডেন্স প্রযুক্তির ওই রকেট শত্রুর ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা এড়িয়ে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের প্রায় সবাই পর্যটক। নয়াদিল্লির দাবি, এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু ইসলামাবাদ তা নাকচ করেছে। এর পর থেকে উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। উত্তেজনা বাড়ছে।

আরও পড়ুনক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে বিলাওয়ালের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল ভারত৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি