হেফাজতে ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ এনসিপি নেত্রীসহ ৬ নারীর
Published: 5th, May 2025 GMT
নারীকে জনসভায় ‘বেশ্যা’ বলার অভিযোগে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৩ নেত্রী ও তিন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
সোমবার দুপুরে অ্যাডভোকেট পলাশের মাধ্যমে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশদাতাদের মধ্যে রয়েছেন এনসিপির তিন নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা, দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী ও নীলা আফরোজ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের তিন নারী—উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা ও ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া।
সাংস্কৃতিক কর্মী ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া বলেন, সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সমাবেশে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নারীদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যেই অবমাননাকর, অশ্লীল ও গর্হিত ভাষায় বক্তব্য প্রদান করেছেন। এমন বক্তব্য শুধু নারীর সম্মানহানিই নয়, এটি মানবাধিকার, সংবিধান ও সুস্থ সমাজের চেতনার বিরুদ্ধে একটি প্রকাশ্য আক্রমণ। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—এ ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য যারা দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
বিবৃতিতে তারা বলেন, নারী সংস্কার কমিশনকে কেন্দ্র করে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারেন, কিন্তু জনসমাবেশে নারীদের ‘বেশ্যা’ বলা নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। এটা নারীর অধিকার ও লড়াইয়ের প্রতি অবমাননা। আমাদের দলীয় অবস্থানও এর ঘোর বিরোধী।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারের প্রস্তাবে যারা নারী সংস্কার কমিশন গঠনে যুক্ত ছিলেন, তাদের জনপরিসরে গালিগালাজ করা সমগ্র বাংলাদেশের নারীদের জন্য হুমকি। নারীর স্বাধীনতা ও জীবনমানের ওপর প্রণীত প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে, কিন্তু অবমাননা বরদাশত করা হবে না।
এছাড়াও ইসলামি আইনের আলোকে হেফাজতের নেতারা তাদের পরিবারের নারীদের সম্পত্তি দিয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও উত্থাপন করেছেন নেত্রীরা।
নোটিশে আরও বলা হয়, এই লিগ্যাল নোটিশ নারীর মর্যাদা রক্ষায় সচেতন নাগরিক সমাজ ও সংস্কৃতিকর্মীদের একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ। এতে নারী বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও লেখক উম্মে ফারহানা বলেন, নারীর অধিকার নিয়ে নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে হেফাজত প্রকাশ্য জনসভায় নারীকে গালি দিয়েছে, তারা নারীর অধিকার চাইলেই গালি দিচ্ছে এমনটা তো নতুন সম্ভাবনার এই দিনে আশা করিনি। আমরা আশা করেছিলাম বৈষম্যহীন বাংলাদেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক। অন্য ধর্মের নারী থেকে শুরু করে পাহাড়ে বাস করা নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক, কিন্তু নারীরা যখন অধিকার চায় তখন তাদের গালি দিচ্ছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিক সম্পত্তিতে অধিকার, বৈবাহিক ধর্ষণ ও বাল্যবিবাহ নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হওয়াতে তাদের পুরুষতান্ত্রিক উগ্রতার বহিঃপ্রকাশ এই গালি। এমনিতেও তারা গালি দেন সাধারণত, তবে প্রকাশ্যে এভাবে গালি দেওয়ায় নারীরা ক্ষুব্ধ। তারা নিজেরাই ইসলামের আদর্শ মানছেন না। আবার যখন নারীরা অধিকার চায় তখন তাদের গালি দিচ্ছেন। এর প্রেক্ষিতে আমরা হেফাজতের বিরুদ্ধে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি।
এনসিপি নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে যে কারও দ্বিমত থাকতেই পারে। কিন্তু এভাবে একটি পাবলিক সমাবেশে নারীদের বেশ্যা বলা যাবে না। এটা নারীদের অধিকার ও লড়াইয়ের প্রতি অবমাননা। কত নারী আমাদের আশপাশে নিপীড়িত হচ্ছে, তাদের আমরা কী বার্তা দিচ্ছি। আমাদের দলীয় অবস্থানও এটার বিপক্ষে। এটা একধরনের নিপীড়ন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প স স ক র কম এনস প ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘রংপুরের ৩৩ আসনে জিততে কাজ করছে জামায়াত’
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ৩৩টি আসনে জিততে কাজ করছে জামায়াত। সব আসনে আমরা প্রার্থী ঘোষণা করেছি। আসনগুলোতে জেতার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
শুক্রবার বিকেলে রংপুর নগরীর শাপলা চত্বরে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভার আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা রংপুরে আগামী ৪ জুলাই জনসভার আয়োজন করতে যাচ্ছি। এ জনসভা সফল করার ক্ষেত্রে সব জনশক্তিকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। ছাত্র-শ্রমিক, দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে জনসভা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
তিনি জানান, এ জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। প্রধান বক্তা থাকবেন সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম। এ ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবার রহমান বেলাল, মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, মহানগরী সেক্রেটারি একেএম আনোয়ারুল হক কাজল, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক, রংপুর মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মো. রায়হান সিরাজী ও আল-আমীন হাসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগর সভাপতি নুরুল হুদা, সেক্রেটারি আনিছুর রহমানসহ জেলা ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।