পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় আমেনা আক্তার নামে ৭ম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রী চার দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এ ব্যাপারে ওই ছাত্রী মা মরিয়ম বেগম ( ৮ মে) বৃহস্পতিবার মঠবাড়িয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রী আমেনা আক্তার উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের আল আমিন তালুকদারের মেয়ে। আমেনা আক্তার পাশের ভান্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ জুনিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। 

মা মরিয়ম বেগম জানান, তার মেয়ে আমেনা আক্তার তেলিখালী সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে আবাসিক থেকে দক্ষিণ জুনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে করে। গত বুধবার ( ৭ মে)  শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বের হয়। পরে সেখান থেকে মঠবাড়িয়ার ধানীসাফায় নিজ গ্রামের বাড়িতে আসে।  বাড়িতে  বাবার সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়ে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।

নিখোঁজ আমেনা আক্তারের মামা লোকমান হোসেন জানান, তার ভাগ্নে নিখোঁজের পর থেকে তারা আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন। গত চার দিনে সন্ধান না পাওয়ায় তার পরিবার দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছে।  মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় আমেনা কোথায় কোন অবস্থায় আছে, জানতে পারছেন না। 

 মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তাকে উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। 

ঢাকা/তাওহিদুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মঠব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

ভাঙছে নদ, কাঁদছে মানুষ

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক মাসে ১০০ পরিবারের বসতবাড়িসহ ফসলি জমি নদে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েকশ পরিবার। হুমকিতে রয়েছে স্থানীয় বাজার, আবাদি জমি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ায় রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের সুখেরবাতি, সোনাপুর, ঘুঘুমারী ও নামাজেরচর এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে ১০০ পরিবারের বসতবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদে বিলীন হয়েছে। বসতভিটা বিলীন হওয়ায় অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এসব এলাকার ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যদিও জিও ব্যাগ ফেলা হয়, তাও নামমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে দায় সারে কর্তৃপক্ষ।
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৮ এপ্রিল ভাঙন কবলিত এলাকা সুখেরবাতি, ঘুঘুমারী, সোনাপুর ও নামাজের চর পরিদর্শন করেছেন রংপুর পানি উন্নয়ন (পাউবো) সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবীব। পরে আবারও ১৮ এপ্রিল ওইসব ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিডব্লিউডিবি ডিজাইন সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী ফাইয়াজ জালাল উদ্দিন, ডিজাইন সার্কেলের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। কিন্তু তারা পরিদর্শন করে যাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, বছরের পর বছর নদী ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত পরিবার। অথচ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না সরকার।
নদী ভাঙনের শিকার শিল্পী খাতুনের পরিবার। তিনি জানান, এক সপ্তাহে আগে তাঁর বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। নিজের কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে ঠাঁই নিয়ে বাস করছেন। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব তিনি।
নদী ভাঙনের শিকার নাজমা খাতুন বলেন, তাঁর বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হয়ে গেছে ওই বাড়ি। পরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। আর তাঁর দাদার বাড়িতে রয়েছেন বাবা আমজাদ আলী।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সাজেদা খাতুন জানান, তিন দিন আগে তাঁর বসতভিটা নদে বিলীন হয়ে গেছে। তাঁর যেটুকু আবাদি জমি ছিল, তাও নদে বিলীন হয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তারা।
নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের ভাষ্য, প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ভাঙন। এতে বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। তাদের চোখের সামনেই সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া তাদের আর কিছুই করার ছিল না। তারা এখন বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, জিও ব্যাগ ও বান্ডালের টেন্ডার বাতিল করেছে বোর্ড। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ সংকটের কারণে টেন্ডার বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ