স্টিভ জবস। আমেরিকান প্রযুক্তিবিদ। মাইক্রোকম্পিউটার বিপ্লবের অন্যতম অগ্রদূত। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই প্রযুক্তিবিদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক

রিড কলেজ তখন ছিল সম্ভবত দেশের সেরা ক্যালিগ্রাফি ইনস্টিটিউট। ক্যাম্পাসজুড়ে ভরে থাকা পোস্টারগুলো ছিল হ্যান্ড-ক্যালিগ্রাফির চমৎকার সব নমুনা। যেহেতু আমি পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছি, ফলে আমাকে নরমাল ক্লাসগুলো আর করতে হচ্ছে না; তাই বিষয়টি শেখার জন্য একটি ক্যালিগ্রাফি ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেরিফ ও স্যান-সেরিফ টাইপফেস শিখলাম আমি; শিখলাম অসাধারণ টাইপোগ্রাফিকে, যা সৃষ্টি করে, বিভিন্ন বর্ণের কম্বিনেশনের মধ্যে সেই শূন্যস্থানটিকে শনাক্ত করা।  
ম্যাক সৃষ্টি 
জীবনে এসবের কোনোটি কাজে লাগাতে পারব– এমন আশা ছিল না। দশ বছর পর, আমরা যখন প্রথম ম্যাকিনটোস কম্পিউটারের নকশা করছিলাম, এই পাঠ তখন কাজে দিল। তার সবটাই কাজে লাগালাম ‘ম্যাক’-এর নকশায়। কলেজে একমাত্র কোর্সটিতে যদি ভর্তি না হতাম, তবে মাল্টিপল টাইপফেস বা আনুপাতিক স্পেসের ফন্টসমৃদ্ধ ‘ম্যাক’-এর সৃষ্টি হতো না! ভাবি, যদি কলেজের পাঠ ছেড়ে না দিতাম, তাহলে হয়তো কোনোদিনই ক্যালিগ্রাফি ক্লাসে ভর্তি হওয়া হতো না আমার; আর পারসোনাল কম্পিউটারে চমৎকার টাইপোগ্রাফিরও উদ্ভাবন হতো না। 
জন্মের আগেই দত্তক
এবার একটু পেছনে ফিরে যাই। আসলে আমার মা ছিলেন অবিবাহিত, কলেজপড়ুয়া তরুণী। জন্মের আগেই আমাকে দত্তক দিয়ে দেন এক আইনজীবী পরিবারের কাছে। আমি যখন জন্মালাম, সেই দম্পতি বেঁকে বসলেন; কেননা, তারা নাকি একটা কন্যার প্রত্যাশা করেছিলেন। ফলে আমাকে দত্তক নিতে আরও যারা আগ্রহী ছিলেন, তাদের তালিকা বের করে ফোন করা হলো মাঝরাতে : ‘অপ্রত্যাশিতভাবে সন্তানটি ছেলে হয়েছে; আপনারা কি ওকে নেবেন?’ তারা বললেন, ‘হ্যাঁ, নিশ্চয়ই।’ যদিও পরে আমার জন্মদাত্রী মা জানতে পেরেছিলেন আমার দত্তক মা কখনোই কলেজ পাস করেননি।  
টাকার অভাবে কলেজ ছেড়ে দেওয়া
জন্মের ১৭ বছর পর কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলাম আমি। এমন একটি কলেজকে আমি বেছে নিলাম, যেখানে পড়াশোনার খরচ স্ট্যানফোর্ডের মতোই ব্যয়বহুল। পড়ার খরচ জোগাতে গিয়ে আমার খেটে খাওয়া বাবা-মার জমানো সব টাকা ফুরিয়ে গেল। ছয় মাস এভাবে যেতেই আমার মনে হলো, পড়াশোনার কোনো মূল্য নেই। তাহলে জীবনে আমি করবটা কী– এ নিয়ে কোনো ধারণা ছিল না আমার; ধারণা ছিল না কলেজ কীভাবে আমাকে জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে, সে ব্যাপারেও। অথচ বাবা-মার সারাজীবনের জমানো সব টাকা আমি কলেজেই খরচ করে বসে আছি! এ কারণে ঠিক করলাম, কলেজ ছেড়ে দেব। মনে হলো, এতে সব ঠিক হয়ে যাবে। 
বন্ধুর রুমের ফ্লোর ও নতুন পথের খোঁজ.

..
সে সময় ব্যাপারটা বেশ আতঙ্কদায়ক ছিল। এখন যখন অতীতে ফিরে তাকাই, তখন টের পাই, সেটি ছিল আমার জীবনের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত। পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার মুহূর্ত থেকেই ক্লাসসংক্রান্ত সব ব্যস্ততা ফুরিয়ে গেল আমার। নজর দিলাম নতুন কোনো পথ খুঁজে নেওয়ার। ব্যাপারটা পুরোপুরি রোমান্টিক ছিল না। আমার নিজের জন্য কোনো রুম ছিল না। ফলে বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে আমাকে ঘুমাতে হতো। ৫ সেন্ট মূল্যে কোকের বোতল রিটার্ন দিয়ে পাওয়া টাকায় খাবার কিনতাম আমি। সপ্তাহে একদিন ভালো খাবার পাওয়ার জন্য 
প্রতি রোববার সাত মাইল হেঁটে শহরে, 
হরে কৃষ্ণ মন্দিরে যেতে হতো আমাকে। ব্যাপারটা আমার ভালোই লাগত। এই যেতে যেতে পথে যে কৌতূহল ও ভাবনাগুলো খেলে যেত মাথায়, তার ফল আমি পরে পেয়েছি। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিনা মূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সুযোগ, সারা দেশে ৮টি কেন্দ্রে

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ প্রশিক্ষণের মেয়াদ দুই মাস। প্রশিক্ষণটি আগামী ১২ অক্টোবর শুরু হবে, চলবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সরকারি সনদ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের ৯ অক্টোবরের মধ্যে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে আবেদন করতে হবে।

প্রশিক্ষণের বিষয়

১. বেসিক কম্পিউটার,

২. অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ইউনিকোড বাংলা,

৩. ইন্টারনেট,

৪. গ্রাফিক ডিজাইন,

৫. ফ্রিল্যান্সিং,

৬. মার্কেটপ্লেস ও কনসালটিং।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫আবেদনের যোগ্যতা

১. ন্যূনতম দাখিল বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হতে হবে,

২. হাফেজদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হবে,

৩. উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে,

৪. প্রার্থীকে কম্পিউটার চালনায় বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে,

৫. যাঁদের নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে হাফেজ, ইমাম, মাদ্রাসাছাত্র ও বেকার যুবকদের বিনা কোর্স ফিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় কোর্সে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।যে ৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

১. ঢাকা,

২. চট্টগ্রাম,

৩. রাজশাহী,

৪. খুলনা,

৫. বরিশাল,

৬. সিলেট,

৭. দিনাজপুর,

৮. গোপালগঞ্জ।

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ৭ ঘণ্টা আগেদরকারি কাগজপত্র

১. শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি,

২. জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি,

৩. এক কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি জমা দিতে হবে,

৪. ইমামদের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অথবা ওয়ার্ড কমিশনারের কাছ থেকে নেওয়া ইমামতির প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে,

৫. মাদ্রাসাছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে ছাত্রত্ব প্রমাণের কপি জমা দিতে হবে।

নিবন্ধন ফি

মনোনীত প্রার্থীদের নিবন্ধন ফি হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হবে।

দেশের ৮টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ