কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানে ভারতীয় বাহিনীর চারদিনের অপারেশন সিঁদুর নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পারমাণবিক অস্ত্রধর দুই দেশের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর পর প্রথমবারের মতো সোমবার ভারতের স্থানীয় সময় রাত ৮টায় এই ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তার। সূত্র: এনডিটিভি

গত ২২ এপ্রিল ভারত-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে দুই সপ্তাহ পর গত ৭ মে চিরবৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুর নামের এক সামরিক অভিযান শুরু করে ভারত। যদিও পেহেলগামে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

ওই দিন পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার প্রায় ১০০ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।

এই হামলার জবাবে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে ‘বুনইয়ান-উন-মারসুস’ নামের অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে ভারতের অন্তত ২৬টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

শনিবার (১০ মে) যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। শুভ বুদ্ধির ব্যবহার করে উভয়পক্ষ এই সিদ্ধান্তে আসায় অভিনন্দন।’’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই সেদিন ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত করা হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে সেনা, বিমান ও নৌ বাহিনী পাকিস্তানের দিকে সব ধরনের গুলি চালানো বন্ধ রাখছে।

এই চুক্তিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উভয় দেশই চুক্তি লঙ্ঘন করে আবারও হামলা-পাল্টা হামলা চালায়। ভারতের সেনাবাহিনী হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী যদি পরবর্তীতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তাহলে সেই হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী চুক্তি লঙ্ঘন করে কোনও হামলা চালানো হলে, তার যথাযথ জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যরাতেই এনসিটি ছাড়ল সাইফ পাওয়ার টেক

রোববার মধ্যরাতেই চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ছেড়েছে টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ার টেক। রাত ১২টা ১ মিনিটেই তাদের কাছ থেকে টার্মিনাল বুঝে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর পর তারা নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হওয়া ড্রাইডক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নতুন চুক্তি করে টার্মিনালের দায়িত্ব হস্তান্তর করে। এ সময় বন্দর, ড্রাইডক ও সাইফ পাওয়ারটেকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আজ সোমবার থেকে টার্মিনাল পরিচালনা করছে নৌবাহিনী। 

আইনী বাধ্যবাধকতা থাকায় সরাসরি নৌবাহিনীকে না দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত একটি সামরিক জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানার মধ্যেই এটির অবস্থান।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সমকালকে জানান, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত পাবার পর ড্রাইডকের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনার চুক্তির বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়েছে। ৬ জুলাই রাত ১২টার পরে ড্রাইডকের সঙ্গে ছয় মাসের জন্য এনসিটি পরিচালনার চুক্তি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সময় সাইফ পাওয়ার টেক আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।

১৭ বছর ধরে এনসিটি পরিচালনা করা সাইফ পাওয়ার টেকের গতকাল ছিল শেষ দিন। ২০০৭ সাল থেকে তারা এটি পরিচালনা করছে। আজ ৭ জুলাই থেকে নৌবাহিনীর মাধ্যমে এটি পরিচালনা করছে চিটাগাং ড্রাইডক। তবে সাইফ পাওয়ার টেকের জনবল দিয়েই আপাতত এটি পরিচালনা করছে তারা।

সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমীন সমকালকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে বন্দরকে আমরা দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। একই সময় বন্দর নৌবাহিনীর তত্বাবধানে পরিচালিত ড্রাইডককে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। নতুন চুক্তি করেছে। এনসিটি ছাড়লেও যে কোনো প্রয়োজনে বন্দরকে সেবা প্রদানে আমরা প্রস্তুত আছি সবসময়।’ প্রসঙ্গত, এনসিটি ছাড়লেও সাইফের কার্যক্রম চুক্তি অনুযায়ী বহাল আছে সিসিটিতে।

চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৪টি কনটেইনার টার্মিনাল আছে। এগুলো হলো- চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনাল (সিসিটি), নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), জেনারেল কারগো বার্থ (কনটেইনার ও বাল্ক-জিসিবি) এবং পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল (পিসিটি)। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে হ্যান্ডলিং হওয়া ৩২ লাখ টিইইউস কনটেইনারের মধ্যে ৪৪ শতাংশ এককভাবে পরিচালনা হয়েছে এনসিটি থেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ