কীর্তনখোলার তীরে পড়ে থাকা সেই শিশুর মেরুদণ্ডের টিউমার অপসারণ
Published: 17th, May 2025 GMT
বরিশাল নগরের কীর্তণখোলার তীরে গত ২২ মার্চ উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতকের মেরুদণ্ডের টিউমার অপসারণে অস্ত্রপচার সফল হয়েছে। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে শিশুটির অস্ত্রপচার হয়। বর্তমানে সেখানেই বেডে রয়েছে সে।
জানা যায়, টিউমারসহ ভূমিষ্ঠ শিশুটির চিকিৎসা ব্যয়ের ভয়ে জন্মের পরদিনই তার বাবা-মা শিশুটিকে দত্তক দিয়েছিলেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুটিকে।
শিশুটির বাবা গণেশ দত্ত শনিবার দুপুরে সমকালকে জানান, অস্ত্রপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে শিশুটিকে শয্যায় দেওয়া হয়েছে। তার খাওয়াসহ সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যবেক্ষণের জন্য আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজের চেষ্টায় চিকিৎসা ব্যয়ে কিছুটা সাহায্য পেয়েছেন। তবে রাজধানীতে থাকাসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পরভেজ বলেন, গত ২২ মার্চ রাতে পরিচয়হীন অবস্থায় উদ্ধারের পর শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তরে তত্ত্বাবধানে ছিলো। ৬ দিন পর শিশুটির অভিবাবকের সন্ধান পাওয়া যায়। শিশুটির ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় মেটানো দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগাসহ সাধ্য অনুযায়ী নানা চেষ্টা করেছি।
শিশুটি বাগেরহাট পৌর শহরের ফুটপথে চা বিক্রেতা গণেশ শ্যাম-অন্তরা দাস দম্পত্তির প্রথম সন্তান। গণেশের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২১ মার্চ বরিশাল নগরের সদর রোড মোখলেসুর রহমান ক্লিনিকে সিজারিয়ান অস্ত্রপচারে শিশুটির জন্ম হয়। জন্মগতভাবেই শিশুটির পিঠের মেরুদণ্ডে টিউমার জাতীয় জটিল কিছু দেখা যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিনই নবজাতককে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ার আশংকায় পরদিন ২২ মার্চ ওয়ার্ডে বসেই শিশুটিকে এক রিকশাচালকের কাছে দত্তক দেওয়া হয়। তারপর শিশুটির সঙ্গে সঠিক কী হয় তা জানা না গেলেও ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুটিকে।
এ নিয়ে সমকাল অনলাইনে ‘কীর্তনখোলার তীরে পড়ে ছিল তোয়ালে মোড়ানো শিশু, পাশে ঝুড়ি ও ফিডার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল বর শ ল নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।