এআই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশে সুপারকম্পিউটার তৈরি করছে চীন
Published: 22nd, May 2025 GMT
এআই-চালিত স্যাটেলাইটের (কৃত্রিম উপগ্রহ) মাধ্যমে মহাকাশে প্রথম সুপারকম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করছে চীন। মহাকাশে সুপারকম্পিউটারের নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য এরই মধ্যে ১২টি এআই-চালিত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে দেশটি। দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি করপোরেশন এই সুপারকম্পিউটার পরিচালনা করবে।
মহাকাশে সুপারকম্পিউটার তৈরির জন্য প্রায় ২ হাজার ৮০০ স্যাটেলাইট পাঠানো হবে। এরই মধ্যে মহাকাশে পাঠানো স্যাটেলাইটগুলো সেকেন্ডে ৭৪৪ ট্রিলিয়ন তথ্য গণনার পাশাপাশি ১০০ গিগাবিট গতিতে আদান-প্রদান করতে পারে। বর্তমানে বিভিন্ন স্যাটেলাইটের ১০ শতাংশের কম তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। এ সমস্যার সমাধান করতেই মহাকাশভিত্তিক তথ্য প্রক্রিয়াকরণের দিকে ঝুঁকছে চীন।
স্যাটেলাইটনির্ভর নেটওয়ার্কটি পৃথিবীর যেকোনো সুপারকম্পিউটার সিস্টেমের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। আর তাই পৃথিবীভিত্তিক অবকাঠামোর ওপর নির্ভর না করে সরাসরি কক্ষপথেই বিপুল পরিমাণ তথ্য গণনা করবে স্যাটেলাইট। শুধু তা–ই নয়, পৃথিবীতে থাকা সুপারকম্পিউটারের মতো ব্যয়বহুল কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে না স্যাটেলাইটগুলোর।
মহাকাশ নিয়ে চীনের এমন উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা প্রথম নয়। এ বছরের শুরুতে বেইজিং সীমাহীন সৌরশক্তি ব্যবহার করার জন্য থ্রি গর্জেস ড্যাম অব স্পেস নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে কক্ষপথে এক কিলোমিটার প্রশস্ত একটি বিশাল সৌর অ্যারে স্থাপন করা হবে। এটি পৃথিবীর দিবা-রাত্রি চক্র বা আবহাওয়া দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে সৌরশক্তি প্রদান করবে বলে জানা গেছে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য ট ল ইট
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি