বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান ও তার পরিবারের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ শনিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) পক্ষে আদালতে আবেদন করেন উপ-পরিচালক মো. তানজির হাসিব সরকার।

আদেশে বিচারক বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান ও তার স্ত্রী তাহমিদা বেগম এবং ছেলে শেখ লাবিব হান্নানের সিটি ব্যাংক পিএলসির সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, সুপার সেভার্স ও মুদারাবা টিডিআর হিসাবে মোট বর্তমান স্থিতি রয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩২২ টাকা।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতিসাধন, ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং বিদেশে অর্থ পাচারসহ নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

আবেদনে আরও বলা হয়, বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এবং তার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা গোপন করার চেষ্টা করছেন। যদি এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে সেগুলো পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে। এজন্য জরুরিভিত্তিতে শেখ আব্দুল হান্নান এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ম নব হ ন ব চ রক স থ বর

এছাড়াও পড়ুন:

অভয়নগরে তরিকুল হত্যা: পুরুষশূন্য ডহর মশিয়াহাটী গ্রাম

যশোরের অভয়নগরে পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রাম। ঘটনার পরপরই গ্রামটি জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

তরিকুল হত্যার পরপর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা গ্রামে ঢুকে প্রায় ২০টি বাড়ি লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়।

ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতের। পরদিন শুক্রবার (২৩ মে) সারা দিন ভষ্মীভূত বাড়িগুলোতে চলতে থাকে আহাজারি।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে কৃষক দল নেতাকে হত্যার পর ২০ বাড়িতে আগুন

আড়াইহাজারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৪

সরেজমিন দেখা যায়, ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে বাড়িগুলো পুড়ে ভষ্ম হয়ে আছে। ঘরের ভেতর পড়ে আছে আগুনে পোড়া জিনিসপত্রের ছাই। কোনো কোনো বাড়ির ঘরের মধ্যে ভাঙচুর করা খাট, পালঙ্ক, চেয়ার, টেবিল, আলনা, আলমারি বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পোড়া বাড়িরগুলোর সামনে পড়ে আছে অনন্ত পাঁচটি পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেল এবং একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যান।

ঘরের টিনগুলো পুড়ে দুমড়েমুচড়ে পড়ে আছে। ঘরে চাল নেই, জানালাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। কয়েকটি ঘরের ভেতরে ঢুকতেই নাকে এল পোড়া গন্ধ। ঘরের ভেতরে পুড়ে কয়লা হয়ে আছে আসবাবপত্র, আছে জামা-কাপড়, লেপ-তোশক-বিছানা, টেলিভিশন, ফ্রিজ।  আগুনের শিখায় কয়েকটি বাড়ির পাশের গাছ পুড়ে গেছে।

বাড়িগুলোতে কথা বলার মতো কোনো পুরুষ মানুষ চোখে পড়েনি। কথা হয় কয়েজন প্রবীণ লোকদের সঙ্গে।

স্মৃতি বিশ্বাস নামে বৃদ্ধা বলেন, “আমাকে পচুর মারা হয়েছে। আমি উঠে বসতে পারছি না, আমার যা কিছু ছিল সব পুড়িয়ে দিয়েছে ওরা। আমাদের কী অপরাধ?”

একইভাবে পান্না বিশ্বাস নামে এক গৃহিনী বলেন, “আমার পরিবারের চারটি জীবন ছাড়া কিছু আর নেই, পরনের কাপড়ও ছেড়া। কি নিয়ে বেঁচে থাকব, কিছু নেই! চারদিকে আমার হতাশার ছাপ।”

৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা বলেন, “তোমরা খাওয়ার দিলেও খেতে পারব না। খাওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা লাগে তা আমাদের কিছুই নেই। আমরা হয়তো আর কোনোদিন নিজ বাড়িতে রান্না করে খেতে পারব না। পরিবারের মানুষগুলো নিয়ে একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারব না।”

এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম জানান, হত্যার ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। এজন্য এখনো মামলা রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া হত্যাকাণ্ড ঘিরে ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ না দেয়াই পুলিশ সন্দেহভাজন কাউকে আটক করতে পারেনি।

ঢাকা/রিটন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ