কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার সুরক্ষাপ্রাচীর প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) না থাকায় দ্বীপটির বিশাল অংশ সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ দ্বীপে কয়েক দশক আগেও অন্তত ১ হাজার ২০০ একর প্যারাবন ছিল। তৎকালীন সময়ে ১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল প্যারাবনকে। কিন্তু গত তিন দশকে ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছে দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর।

প্যারাবন ধ্বংসের কারণে সমুদ্রের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি এবং ভিটেমাটি। প্রায় ৯০০ একর প্যারাবন ধ্বংস হয়েছে লবণ মাঠ তৈরির জন্য। টিকে থাকা বাকি ৩০০ একর প্যারাবনও হুমকিতে পড়েছে আগ্রাসী লবণ চাষের কারণে। এ ছাড়া এ দ্বীপে নেই কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ। তাই প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে প্রবল ঝড়, বন্যা ও প্লাবনের কারণে কুতুবদিয়ার অধিকাংশ সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়।

এক দশক আগেও কুতুবদিয়া দ্বীপের আয়তন ছিল ২০ বর্গকিলোমিটারের চেয়ে বেশি। এখন ভাঙনের কারণে কুতুবদিয়া দ্বীপের আয়তন ১৮ বর্গকিলোমিটারের চেয়েও কমে গেছে।

তাই পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ, কুতুবদিয়া দ্বীপকে রক্ষার্থে দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বীপের সুরক্ষাপ্রাচীর হিসেবে প্যারাবন (ম্যানগ্রোভ) লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে প্যারাবন টিকিয়ে রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হোক। কুতুবদিয়া দ্বীপকে বাঁচাতে পারলে বেঁচে যাবে দেড় লক্ষাধিক বাসিন্দার জনজীবন।

আব্দুল্লাহ নাজিম আল মামুন

কুতুবদিয়া, কক্সবাজার

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স রক ষ প র চ র র প য র বন

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ