রাজধানী ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের উন্নয়নবৈষম্য নিয়ে সরব হয়েছেন সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন। নগরের জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই সমস্যা নিরসনে সরকার যে বরাদ্দ দিয়েছে তা নিয়েই মূলত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।

আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের টাইগার পাসে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে জলাবদ্ধতা নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ঢাকার জন্য যে বাজেট দেওয়া হয়, ৭০-৮০ লাখের মানুষের শহর চট্টগ্রামের জন্য তার কতটুকু দেওয়া হয়? ৫ কোটি টাকা করে খাল আর নালা পরিষ্কারের জন্য এবং আড়াই কোটি টাকা একটা বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের দিয়েছে সরকার। এই ৮-১০ কোটি টাকাই ৭০-৮০ লাখ মানুষের জন্য বরাদ্দ?’

‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মেয়র শাহাদাত হোসেন। বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি আয়োজিত এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দেশ রূপান্তর পত্রিকার চট্টগ্রামের ব্যুরোপ্রধান ভূঁইয়া নজরুল।

সেমিনারে ঢাকার তুলনায় বাজেটে কম বরাদ্দ রাখা এবং জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের জন্য যন্ত্রপাতি কেনার প্রকল্প অনুমোদন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত। তিনি বলেন, ২০২২ সালে ৩৯৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়। সেটা যেভাবে আছে, ওভাবে ওখানে পড়ে আছে। মন্ত্রণালয়ে কয়েকবার যাওয়ার পর এখন একটা জায়গায় এসেছে। চূড়ান্তভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১০০ কোটি টাকা কমিয়ে ২৯৮ কোটি টাকা করা হয়েছে। এ নিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার কথাও জানান সেমিনারে। তবু কাজ হয়নি বলে দাবি তাঁর।

জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের জন্য সিটি করপোরেশনের যন্ত্রপাতি দরকার উল্লেখ করে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এখন যেগুলো আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরোনো। এ যন্ত্রগুলো দিয়ে যখনই কাজ করতে যাই, তখনই নষ্ট হচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়কে বলেছি। আর কোথায় যাব?’

চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় বৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া রাস্তার এই ছবি নগরবাসী কাছে খুবই পরিচিত। গত বছরের ২১ আগস্ট তোলা হয় ছবিটি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য বর দ দ ন রসন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে ৭ মাসে চীনের ৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ: রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর নতুন যাত্রায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক ও ব্যবসায়ী সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। চীনা বিনিয়োগের গতিও বাড়ছে দিন দিন। এরই ধারাবাহিকতায় সাত মাসে ৪০ কোটি ডলারের চীনা বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ‘চীন-বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনারে চীনের রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন। বাসসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে চীনের উদ্যোক্তাদের সংগঠন চায়না এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ-সিইইএবি এ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বাজার প্রবণতা, বিনিয়োগের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে শিল্প প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

সিইইএবি প্রেসিডেন্ট হান কুন এ গবেষণা প্রতিবেদন পেশ করেন। যেখানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ-জ্বালানি, সড়ক, বন্দর, টেক্সটাইল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে সহযোগিতার প্রসঙ্গ উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে চীনের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে আগ্রহী। এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। আর্থসামাজিক খাতেও অবদান রাখবে চীন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে চীনে বিডার একটি অফিস খোলা হবে। বাংলাদেশে চায়না টাউন নেই, ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, চীন বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে শীর্ষ দেশও চীন। চীনের সঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে দুই দেশের সহযোগিতার আরও সুযোগ আছে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সাহেলা আক্তার, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মোকছেদ আলী ও ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সালাম বেপারী। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এবং চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ