প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে দেশ বড় সংকটের মধ্যে রয়েছে। এ জন্য পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার বলে প্রধান উপদেষ্টা মনে করছেন।’

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আজ রোববার বিকেল থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। ওই বৈঠক শেষে যমুনা থেকে বের হয়ে রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘তিনি আলোচনা শুরু করেছেন এই কথা বলে যে আমরা অনেক বড় সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট বলতে উনি ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের এই পরিবর্তনকে একেবারেই স্বীকার করতে চায় না। পারলে আমাদের এক দিনে ধ্বংস করে দিতে চায় এবং সেই জন্য যা যা করবার দরকার, সব তারা করছে। এই ছিল তাঁর কথা।’

মান্না জানান, বৈঠকে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনীতি সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য বলেছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ, নির্বাচনের রূপরেখা এবং কীভাবে নির্বাচন করতে চান, তা প্রধান উপদেষ্টার বলা উচিত বলেও তাঁকে জানিয়েছেন।

মান্না বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, কম সংস্কার হলে ডিসেম্বরে আর বেশি সংস্কার হলে জুনে নির্বাচন হবে। এ সময় প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগপত্রে লিখে দিতে চেয়েছেন কোনোভাবেই নির্বাচন জুনের পরে যাবে না।’

দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দিন দিন দুর্বল হচ্ছে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, এ কারণে প্রধান উপদেষ্টা চিন্তিত ও হতাশ। তিনি আরও বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেছেন যে জাতীয় ইস্যুগুলোতে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। তাতে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত হয়েছেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের জানিয়েছেন, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকেও তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। সে জন্যই তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে তাঁদের (উপদেষ্টাদের) নিজেদের মধ্যে, সেগুলো একটা বিস্তারিত কাহিনি বললেন.

..কী রকম করে বাকিরা তাঁকে আটকেছেন, পদত্যাগপত্র লিখতে দেননি। লিখলেও সেটা পাঠাতে দেননি এবং তাঁকে ধরে রেখেছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার একটি বাড়িতে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার মশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইতালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরণে আতাউর রহমান (৩৫) নামের একজন গুরুতর আহত হন। তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আতাউর কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।।

গতকালের ওই ঘটনার পরপরই ছোট ইতালি গ্রামের বিস্ফোরণস্থল ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও ডিবি সদস্যরা। উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েকটি তাজা হাতবোমা। বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসে উদ্ধার হওয়া হাতবোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করেন। পরে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আতাউর রহমানসহ কুমিল্লা থেকে আসা চার ব্যক্তি ছোট ইতালি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেনের বাড়িতে ওঠেন। মুক্তারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (৪৫) মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মুক্তারের বাড়ির ভেতরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হন। পরে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর মুক্তার হোসেনের তিন সহযোগী দ্রুত পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন আহত আতাউরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল হক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত হাতবোমা ও কিছু বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। বাগবাড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল সাদিক বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছেন। মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনার সঙ্গে আগামী নির্বাচনে নাশকতার পরিকল্পনার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ