প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার মধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। গত শনিবার রাতে এই সাক্ষাৎ হয়। তার আগে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় এই দুই নেতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেন।

জানা গেছে, যমুনা থেকে বের হয়ে তাঁরা ঢাকা সেনানিবাসে গিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জামায়াত নেতাদের আগ্রহেই এই সাক্ষাৎ হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

হঠাৎ করে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ কেন, জানতে চাইলে আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, এটা কোনো বৈঠক নয়, সৌজন্য সাক্ষাৎ। সেখানে অনানুষ্ঠানিক কিছু কথাবার্তা হয়েছে।

কী বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে জানতে চাইলে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সে লক্ষ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে যাতে (সরকার ও সেনাবাহিনী) একটা সমন্বয়-সমঝোতা হয়, সে জন্য জামায়াত বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’ সেনাপ্রধানের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ সে ধরনের একটি উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। এর মধ্যে গত সপ্তাহে সেনা কর্মকর্তাদের এক সভায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে অভিমত জানান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এরপর আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। যদি ঠিকভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে প্রধান উপদেষ্টার পদে থেকে কী লাভ, সে কথাও বলেন তিনি। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’।

এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। ওই বৈঠক শেষে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার ও সেনাবাহিনী বা সেনাপ্রধানের মধ্যে দূরত্ব কমানোর উদ্যোগ হিসেবে জামায়াতের নেতারা এই সাক্ষাৎ করেন।

অবশ্য জামায়াতের নেতাদের আগে অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলের নেতাদের সঙ্গে সেনাপ্রধানের একটি বৈঠক হয় বলে জানা গেছে। তবে সেটি কোন পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই স ক ষ ৎ পর স থ ত ত স ক ষ ৎ কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় সংসদের জন্য ২৩২ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতীয় সংসদের জন্য ২৩২ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ সচিবালয় কমিশন। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশনের সভায় এ বাজেট অনুমোদন করা হয়।

সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে পরিচালন ব্যয় ও উন্নয়ন খাতে ১৫৪ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা এবং আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে ২৩২ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রাক্কলন, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ২৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ২৫৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বাজেট প্রক্ষেপণ অনুমোদন করা হয়।

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বাজেট অনুমোদন করা হয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী এবং অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ