যুক্তরাজ্যের চেস্টার সিটির ডেপুটি মেয়র থেকে লর্ড মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্বনাথের মেয়ে শিরিন আক্তার। তিনি ৮০৮তম এবং প্রথম বাংলাদেশি নারী লর্ড মেয়র নির্বাচিত হলেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিরিন আক্তার বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর ধর্মদা গ্রামের শাহ হুশিয়ার উল্লাহ ও পারভীন আক্তার দম্পতির দ্বিতীয় মেয়ে। গত শুক্রবার তাঁকে ডেপুটি মেয়র থেকে লর্ড মেয়র নির্বাচিত করা হয়। এতে বাঙালি কমিউনিটির পাশাপাশি নিজ গ্রাম উত্তর ধর্মদা ও তাঁর আত্মীয়স্বজনের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৪ মে সিটির স্থানীয় নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে প্রথম বাংলাদেশি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন শিরিন আক্তার। এক বছরের মাথায় ২০২৪ সালের ১৯ মে তাঁকে চেস্টার সিটির ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত করা হয়। তাঁর এক বছরের মাথায় এবার লর্ড মেয়র হলেন শিরিন। এরই মধ্যে শপথ নিয়ে দায়িত্বও গ্রহণ করেছেন তিনি।
শিরিন আক্তারের জন্ম যুক্তরাজ্যে হলেও ছোটবেলায় তিনি বিশ্বনাথ থানার বিশ্বনাথ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর পড়ালেখা করেছেন। পরে বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং সেখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি চেস্টার সিটির বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সুন্দর আলী রাজের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। দাম্পত্য জীবনে শিরিন দুই সন্তানের জননী। সংসার পরিচালনার পাশাপাশি সোশ্যাল ওয়ার্কে মনোনিবেশ করা শিরিন আক্তার মানবিক নিবেদনের অনন্য প্রতিদান পেলেন সিটির গুরুত্বপূর্ণ এই পদের দায়িত্ব পেয়ে।
এ বিষয়ে লর্ড মেয়র শিরিন আক্তারের বাবা শাহ হুশিয়ার উল্লাহ বলেন, মেয়ের সাফল্যে তিনি ও তাঁর পরিবার আনন্দিত। শিরিন আক্তারের কর্মকাণ্ডে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ গর্বিত হবে, এমনটাই প্রত্যাশা তাঁর। তিনি মেয়ের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করেন।
শিরিন আক্তারের চাচা বাবুল উল্লাহ বলেন, শিরিন আক্তার লর্ড মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় শুধু তাদের পরিবারেরই সুনাম বাড়ছে না, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ ও সিলেটের গর্বিত ইতিহাস রচনা হয়েছে এর মধ্য দিয়ে।
শিরিন আক্তারের এমন অর্জনে বিশ্বনাথ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দয়াল উদ্দিন তালুকদার সমকালকে জানান, এমন সুখবরে তারা আপ্লুত। বিশ্বনাথের নাম বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছেন শিরিন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তিনি শিরিন আক্তারকে শুভেচ্ছা জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ বন থ

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ